কোরবানীর সময় নামধারী পশুপ্রেমীদের ভন্ডামির ও অপপ্রচারের জবাব

কোরবানি হলো মুসলিমদের একটি এবাদত, যা প্রতি বছর বিত্তববানদের ওপর আরোপিত হয় নির্দিষ্ট সময়ে। এই এবাদত নিয়েও অনেকের সমস্যা। আমাদের সমাজে অনেক নামধারী মুসলিম ও অমুসলিমরা মনে করে কোরবানি ও অন্য ধর্মের পশু বলি হচ্ছে অমানবিক ও নির্বিচারে পশু-হত্যা। প্রতিবার কোরবানী ও পশু বলি সময় আসলেই এসব নামধারী পশুপ্রেমীদের দরদ বেড়ে যায়। তাহলে চলুন এ বিষয়ে বিচার বিশ্লেষন করা যাক।

Table of Contents

{tocify} $title={Table of Contents}

প্রথমে আলোচনা করি কোরবানী করা নিয়ে

মহান আল্লাহ্ অন্যান্য সৃষ্টিকে মানুষের কল্যাণের জন্য বানিয়েছেন। এসব প্রাণী মানুষের কাজের জন্য সৃষ্ট। এদেরকে প্রয়োজনে আল্লাহর নামে জবাই করে খাওয়াতেও অন্যায় বা অমানবিক নয় বরং এসব সর্বশক্তিমানের নিয়ামত। কোরবানী শুধু আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের জন্য করা হয় এর পিছনে আর কোনো উদ্দেশ্য থাকে না বা থাকা উচিৎও না। এই কোরবানী চামরা বা অন্য পার্ট সদকা করা, কোরবানীতে কাজ করা শ্রমিকদেরকে ন্যায্য মূল্য দেওয়া, বিক্রয়দাতাকে ন্যায্য মূল্য দেওয়া, কোরবানীর গোশত গরিবদের মাজে বন্টন করা ইত্যাদি সবই আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য। অনেকে বলে জীব হত্যা মহাপাপ কিন্তু এই দাবি খুব সহজেই ভিত্তিহীন প্রমান করা যায় তাই আমরা মনে করি অনর্থক বা অপ্রয়োজনে জীবহত্যা মহাপাপ।

আমরা কোরবানী করি প্রধানত মুসলিম জাতীর পিতা ইবরাহিম (আ) এর নিজ পুত্রকে সেক্রিফাইজ করার ঘটনাকে সরণ করে। [সুরা সাফফাত আয়াত ১০১-১১০] ওই ঘটনাকেই কেন্দ্র করে আল্লাহ কোরআনে কোরবানী করার আদেশ করেন। আমরা কোরবানী করি সম্পূর্ণ আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের জন্য, নিজেদের সার্থে নয়। [সূরা আনআম, আয়াত ১৬২-১৬৩]

মানুষের জন্য অন্য প্রাণীর মাংশ খাওয়া প্রাকৃতিক বিষয়

প্রথমেই বলতে চাই এটাত অবশ্যই মানতে হবে যে আমিষের তুলনায় নিরামিষের উপকারিত বেশি। স্বাভাবিক ভাবে মহানবী (সা) ও আমাদেরকে স্থলজ আমিষ কম খেতে উপদেশ দিয়েছেন। আমিষের উপকারিতা নেই যে এমন নয় কিন্তু বিশেষ করে মাছ মানুষের জন্য় বিশেষ করে গর্ভবতী নারীদের জন্য অনেক বেশি প্রয়োজন। মাছের উপকারিতা সম্পর্কে ধারনা করাটাও কষ্টকর, আমাদের ত্বকের জন্য, চোখের জন্য, সঠিক বৃদ্ধির জন্য, স্মৃতি শক্তির জন্য, হৃদযন্ত্রকে ভালো রাখার জন্য ইত্যাদির ক্ষেত্রে মাছের উপকারিতা অনেক বেশি।

একদল নামধারী পশুপ্রেমিদের গায়ে আগুন লেগে যায় কোরবানীর সময়। কোরবানীতে নাকি নিরীহ প্রাণীদেরকে হত্যা করা হয়। অথচ সারা বছর যে দেশে লক্ষ লক্ষ হাঁস-মুরগি, লক্ষ লক্ষ মাছ, হাজার হাজার গরু, ছাগল, মহিষ, শুকর, ভেড়া, দুম্বা, উট, মেষ ইত্যাদি কেনা বেঁচা হয়, হোটেলে-ঘরে-বিভিন্ন অনুষ্ঠানে রান্না হয়, খাওয়া হয় তখন সেই পশু প্রেশিদেরকে দেখা যায় না। আবার যখন তাদেরকে প্রশ্ন করা হয়, “যারা মাংসাশী প্রাণী তাদের ব্যাপাকে কি বলবেন? তারাওত অন্য প্রাণীদেরকে খাদ্য হিসেবে গ্রহন করে, অন্য নিরীহ প্রাণীদেরকে হত্যা করে!!” তখন তারা এটাকে প্রাকৃতিক নিয়ম বলে চালিয়ে দেয়। তাদের কথা মত এটাই বুঝা যায় প্রাণী হত্যা করে খাওয়া দাওয়া করলে, বিয়ে, জন্মদিন ইত্যাদির অনুষ্ঠান করলে, পার্টি করলে কোন দোষ নয় কিন্তু প্রাণী উৎসর্গ করে ধর্মীয় অনুষ্ঠান বা উৎসব পালন করলেই সেটা অনৈতিক। আজব দ্বিচারিতা!!

বিজ্ঞান বলে তৃণভোজী প্রাণী শুধু উদ্ভিদ জাতীয় খাবার হজম করতে পারে কিন্তু মাংস জাতীয় খাবার হজম করতে পারে না আবার মাংশাসী প্রাণী শুধু মাংস জাতীয় খাবার হজম করতে পারে কিন্তু উদ্ভিদ জাতীয় খাবার হজম করতে পারে না। মানুষ এমন এক প্রাণী যে মাংস ও উদ্ভিদ জাতীয় দুটো খাবারই হজম করতে পারে। যদি মাংস না খাওয়াই যেত তাহলে আমাদের হজম ক্ষমতা এমন কেন হল বা এমন হজম ক্ষমতা থেকেই বা লাভটা কি?

কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া প্রায় সব তৃণভোজী প্রাণীর দাঁত প্ল্যাট বা সমান অপর দিকে কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া প্রায় সব মাংসাশী প্রাণীদের দাঁত সার্প বা তীক্ষ্ণ। কিন্তু মানুষ এমন এক প্রাণী যাদের প্ল্যাট দাঁত যেমন আছে তেমনই সার্প দাঁত ও আছে। যদি মানুষের পক্ষে মাংস না খাওয়াই যায় তাহলে এমন দাঁত কেন রয়েছে বা থেকেই বা লাভটা কি?

যেসব প্রাণী সবুজ উদ্ভিদ, ঘাস, লতাপাতা খেয়ে জীবন ধারণ করে তাদেরকে তৃণভোজী প্রাণী বলে। যে সকল প্রাণী অপর প্রাণীর মাংস খেয়ে জীবনধারণ করে তাদের মাংসাশী প্রাণী বলে। যে সব প্রাণী মাংস ও তৃণ দুই খাদ্য রূপে গ্রহণ করে তাদের সর্বভুক প্রাণী বলে। বিজ্ঞানীরা মানুষকে সর্বভুক প্রাণীদের শ্রেণিতে রেখেছে। মানুষ যদি মাংস খেতেই না পারে তাহলে মানুষ সর্বভুক প্রাণী হল কিভাবে বা হয়ে লাভটাই কি?

আরে ভাই এই প্রশুপ্রেমীরা কি জানে না উদ্ভিদেরও প্রাণ আছে? আর নিরামিষ যেটাই খাই না কেন সেটাই কোন না কোন ভাবে উদ্ভিদ থেকে আসে তাহলে সেই উদ্ভিদেরকে খাওয়ার সময় তাদের প্রতি কোন দরদ থাকে না কেন? এছাড়া আমরা যে কাঠের ফার্নিচার ব্যবহার করি সেগুলা সবগুলাইত গাছ কেটে তৈরি করা হয়, কাগজ, ফেনসিল, দেশলাই কাঠি ইত্যাদি অনেক কিছুইত গাছ থেকে আসে তখন গাছের প্রতি দরদ আসে না? অথচ আমাদের অক্সিজেন সরবরাহের মূল উৎসই হল উদ্ভিদ। প্রতিদিন আমাদের দেহে হাজার হাজার ব্যাকটেরিয়া মারা যায় আমাদের দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার কারনে, ব্যাকটেরিয়া কি প্রাণী নয়? এদের প্রতি দরদ থাকে আসে না? আমরা প্রতিদিন হাজার হাজার মশাকে হত্যা করি, ফসল বাঁচানোর জন্য কিটনাশ দিয়ে ক্ষতিকর পোকামাকর হত্যা করি তখনকি সেই প্রাণী গুলোর প্রতি দরদ আসে না পশুপ্রেমিদের? প্রতিদিন হাজার হাজার হাঁস-মুরগি বিক্রি হয় ও সেগুলাকে হত্যা করে খাওয়া হয়, হাজার হাজার তেলাপোকা, ইদুর, উইপোকা, কাঠপোকা, ছারপোকা ইত্যাদি হত্যা করে মানুষ, তাদের প্রতি দয়া হয় না? মানুষ প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ মাছ খাচ্ছে, মধু নিতে যেয়ে হাজার হাজার মৌমাছির ঘর ভাঙছে অনেক মৌমাছি মারাও যায়, তখনকি সেই প্রাণী গুলোর প্রতি দরদ আসে না পশুপ্রেমিদের? পানিকে বিশুদ্ধ করতে যেয়ে হাজার হাজার ব্যাকটেরিয়া ও পোকামাকরকে হত্যা করা হচ্ছে, সেগুলোর প্রতি কি কোন দরদ আসে না? সেগুলার কি প্রাণ নেই? কখনোত দেখিনি এসবের বিপক্ষে কথা বলতে বা আন্দোলন করতে!!

এই কোরবানীর কারনে সমাজের ও প্রকৃতির অনেক ভাবে উপকার হয়। বিজ্ঞানের ভাষায় বললে এটা খাদ্যশৃঙ্খলের অন্তভূক্ত। মানুষ যদি এসব গবাদি পশুগুলোকে না খায় তাহলে কে খাবে? এখানেত আর বাঘ-ভাল্লুক থাকেনা যে তারা এসব পশুকে খাবে। মানুষ যদি না খায় তাহলে অটোমেটিকলি এসব পশুর সংখ্যা বাড়তে থাকবে যা মানুষ ও পরিবেশের জন্য অনেক ক্ষতির কারন হয়ে দাড়াবে। উদাহরন সরুপ ভারতকে দেখলেই হয়। কয়েক বছর আগে ভারত গরু রপ্তানি বন্ধ করে দেয় ও গরু খাওয়াও ভারতে আঞ্চলিক ভাবে বন্ধ হয়ে যায়। তারপর কি হয়েছিলো? কৃষকরা যে গরুগুলোকে কাজে লাগাতে পারতেছিল না সেগুলোকে ছেড়ে দেওয়া শুরু করে যার কারনে রাস্তা ঘাটে গরু মরে পরে থাকত। অনেক গুলা গরুতো মানুষের উপর আক্রমন করা শুরু করে যার কারনে অনেক মানুষ আহত হয় ও অনেক মানুষ মারা যায়, রাস্তাঘাটে গরুর কারণে অনেক দুর্ঘটনার খবরও পাওয়া গিয়েছিল।

মাংস আমিষের অনেক বড় উৎস। স্তন্যপায়ী জীবের মাংসে সাধারণত প্রচুর আয়রন, প্রোটিন, ভিটামিন এ, বি, জিংক, ফসফরাস, সেলেনিয়াম,  এবং অন্যান্য ভিটামিন ও খনিজ রয়েছে, এছাড়া শর্করা, বিভিন্ন এমিনো এসিড ও নাইট্রোজেনঘটিত পদার্থ রয়েছে এতে যা শরীর গঠনের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। মাংসে বিদ্যমান প্রধান দুটি পেশী প্রোটিন হচ্ছে- এক্টিন ও মায়োসিন। এছাড়া আছে কোলাজেন এবং ইলাস্টিন নামক প্রোটিন।

বিশেষ করে লাল মাংশের কিছু অপকারীতা থাকলেও কিন্তু তাতে অনেক বেশি উপকারীতা রয়েছে। যেমন - শরীরকে ভিটামিন বি, সি, ই, পিপি, ম্যাক্রো- এবং মাইক্রো উপাদান, অপরিহার্য অ্যামিনো অ্যাসিড এবং পলিআনস্যাচুরেটেড ফ্যাট সরবরাহ করে; রক্তাল্পতা প্রতিরোধ করে; কোষ পুনর্নবীকরণ এবং বৃদ্ধি প্রচার করে; শরীরকে সংক্রামক রোগ থেকে রক্ষা করে; পেরেক প্লেট শক্তিশালী করে; চুল একটি প্রাকৃতিক চকচকে দেয়; পেশী ভর জমা করার গতি বাড়ায় (অ্যাথলেটদের মধ্যে); এন্ডোক্রাইন এবং স্নায়ুতন্ত্রের কার্যকলাপকে স্বাভাবিক করে তোলে; ইরেক্টাইল ফাংশন উন্নত করে; হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বাড়ায়; হার্টের ছন্দকে স্বাভাবিক করে তোলে; উদ্বেগ দূর করে; মস্তিষ্কে অক্সিজেন সরবরাহ উন্নত করে; শরীরে অ্যাসিড, ক্ষার, লবণের বিষয়বস্তু নিয়ন্ত্রণ করে; অগ্ন্যাশয় উদ্দীপিত করে; কালো পিত্ত গঠন হ্রাস করে; রক্তে শর্করার মাত্রা স্বাভাবিক সীমার মধ্যে বজায় রাখে, শরীরের বৃদ্ধি সাধন, ক্ষয়পূরণ ও শরীর গঠনে লাল মাংসের ভূমিকা অপরিসীম। মাংসে প্রচুর পরিমানে প্রোটিন আছে যা মানব দেহের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ কারন দেহের অস্থি, পেশি, দাঁত, নখ, নানা দেহযন্ত্র প্রোটিন দিয়ে তৈরি। আবার প্রোটিন থেকেই তৈরি হয় রোগ প্রতিরোধী অ্যান্টিবডি। প্রয়োজনীয় হরমোন তৈরিতেও প্রয়োজন এই প্রোটিনের। কিন্তু কিছু অপকারীতা থাকার কারনে অনেকে ভয় পায় খেতে, আসলে সেগুলো তমেন কোন সমস্যা না যদি কিছুু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নেওয়া হয় ও সচেতন থাকা হয়। ডাক্তারদের পরামর্শ হচ্ছে চর্বি খাওয়াকে এড়িয়ে চলা, কারন মাংসের তুলনায় চর্বিতেই সমস্যা বেশি, বেশি তেলে ভাজি না করা, আগুনে পুড়ে রান্না না করা ও উচ্চ তাপে রান্না না করে অল্প তাপে আস্তে আস্তে ভালো করে রান্না করা, কম তেল দিয়ে রান্না করা, একটানা মাংস না খাওয়া, ৭/৮ দিন গ্যাপ দিয়ে খাওয়া উত্তম, কাচা মাংস বেশিক্ষন খোলায় না রেখে যত দ্রুত সম্ভব রান্না করা বা ফ্রিজে রাখা, খাদ্যতালিকায় সালাদ, সবজি, আঁশযুক্ত ফল, ইসবগুলের ভুসি, তোকমারির শরবত, লেবুর শরবত ইত্যাদি রাখা, অতিরিক্ত মাংস না খাওয়া, পারলে গরু ও ভেড়ার মাংস খাওয়ার পর গরম পানি খাওয়া, মাংস দিয়ে যেসব বিভিন্ন জাংকফুড তৈরি করা হয় তা সম্পূর্ণ খাওয়া থেকে এড়িয়ে চলা ইত্যাদি এমন কয়েকটা পদক্ষেপ গ্রহন করা অনেক উপকারী হবে।  

ছাগলের মাংসে ভিটামিট বি ৩, ভিটামিন বি ১২, ভিটামিন বি ৬, আয়রন, জিঙ্ক, সেলেনিয়াম, প্রোটিন, আমিষ, ফসফরাস, সোডিয়াম, পটাসিয়াম ইত্যাদি থাকে। এই সবকটি উপাদানই শারীরিক গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। প্রতি ১০০ গ্রাম খাসির মাংসে ১২২ ক্যালোরি, ২৩ গ্রাম প্রোটিন, ২.৫৮ গ্রাম ফ্যাট পাওয়া যায়। ছাগলের মাংসে চর্বি ও কোলেষ্ট্রলের পরিমান অনেক কম থাকে, এছাড়া ছাগলের মাংসে সোডিয়ামের পরিমাণ কম থাকে, পটাশিয়ামের পরিমাণ বেশি থাকে। আরো রয়েছে বেশি মাত্রায় লৌহ, যা কিনা আমাদের শরীরের রক্তাল্পতা প্রতিরোধ করে। এই গুণ খাদ্য হিসেবে ছাগলের মাংসের স্বাস্থ্য উপকারিতা বাড়িয়ে দিয়েছে. যার কারনে ছাগলের মাংস যত ইচ্ছা তত খাওয়া যায়।   অবশ্যই খাসিতে ছাগলের তুলনায় কোলেষ্ট্রল ও চর্বি একটু বেশি থাকে।

ভেড়ার মাংস পটাসিয়াম, প্রোটিন, ফসফরাস, জিঙ্ক, ক্যালসিয়াম, সেলেনিয়াম, কপার, সোডিয়াম, ভিটামিন এ, ই এবং সি খনিজ লবন সমৃদ্ধ খাবার। কিন্তু এতে চর্বি ও কোলেষ্ট্রলের মাত্র অন্যান্য পশুদের তুলনা কিছুটা বেশি তাই ভেড়ার মাংস কম খাওয়া উচিৎ। 

কিন্তু প্লানটেইন ঘাস ও রসুনের পাতা ব্যবহার করে ভেড়ার মাংসে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট পেয়েছেন এবং দেখা গেছে এই খাবার ব্যবহারের ফলে ভেড়ার ২০-২৬ শতাংশ বৃদ্ধি, ৫-৭ শতাংশ মাংস উৎপাদন বৃদ্ধি এবং ৭ শতাংশ রক্তে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট বৃদ্ধি পায়। শরীরের চর্বি এবং পেলভিক চর্বি যথাক্রমে ২৪ শতাংশ এবং ৫৬ শতাংশ হ্রাস পায়। মাংসে গুণগত মান উন্নয়নে ঔষধি ঘাসসমূহে কার্যকরী ভূমিকা পাওয়া গেছে। অ্যান্টি অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ ভেড়ার মাংস মানুষের শরীরে ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ ও ক্যানসারসহ জটিল রোগ প্রতিরোধে কাজ করে।

উটের মাংস ফসফরাস, পটাসিয়াম, আয়রন, ম্যাগ্নেসিঅ্যাম, সোডিয়াম,  ভিটামিন বি ১, বি ২, বি ৯, পিপি, সি, ই এবং এ সমৃদ্ধ। এতে চর্বির অভ্যন্তরীণ স্তর নেই, এটি একটি খাদ্যতালিকাগত পণ্য। উটের মাংসে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে যা একটি ফ্রি র‌্যাডিক্যালের আক্রমণকে ব্লক করে যা সেলুলার ক্ষতি করে। তারা জৈব অণুগুলিকে অক্সিডেশন থেকে রক্ষা করে, বিপাকীয় প্রক্রিয়াগুলিতে অংশগ্রহণ করে এবং আর্থ্রাইটিস, ছানি, কার্ডিওভাসকুলার রোগ এবং ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়। এছাড়াও সব ধরণের মাংসের মধ্যে, উটের মাংসে সম্পৃক্ত চর্বি গরু বা ভেড়ার মাংসের তুলনায় একেবারেই কম থাকে। তবে এতে অসম্পৃক্ত চর্বি বেশি পরিমাণে থাকে বলে, এটি রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায় এবং হৃদরোগের ঝুঁকি হ্রাস করে এবং সর্বাধিক প্রোটিন রয়েছে, তাই এটি পেশীবহুল ডিস্ট্রফি, রক্তাল্পতা, ক্লান্তি, উচ্চ কোলেস্টেরল, হার্ট এবং রক্তনালীর রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের দ্বারা ব্যবহারের জন্য নির্দেশিত হয়।

গরুর মাংস ভিটামিন বি ১২, প্রোটিন, জিঙ্ক, সেলেনিয়াম, ভিটামিন বি ৬, বি ৩, কলিজায় ভিটামিন এ, আয়রন, নায়াসিন, রিবোফ্লেভিন, ফসফরাস, পটাসিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, ইত্যাদি থাকে। গরুর মাংসে প্রচুর পরিমাণে জিংক থাকে যা শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। গরুর মাংসে প্রচুর পরিমাণে আয়রন বা লোহা পাওয়া যায়, যা গর্ভবতী মহিলা, বাড়ন্ত শিশু ও কিশোর-কিশোরীদের রক্তশূন্যতা প্রতিরোধ করে, এই লোহা বা আয়রন সহজে অন্ত্রে শোষিত হয়, প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন বি ১২ আছে যা রক্ত তৈরিতে ও স্নায়ু গঠনে ভূমিকা রাখে। গরুর মাংসে এমন অনেক উপকারী প্রোটিন রয়েছে যেগুলা সচরাচর অন্য কোন ফল-মূল, শাক-সবজিতে একসাথে নেই, এই প্রোটিন আমাদের চুল, ত্বক, মাংসপেশি, হাড়সহ অন্যান্য অঙ্গ গঠনে অনেক সাহায্য করে। গরুর মাংসে এই বেটা-অ্যালানাইন আছে যথেষ্ট পরিমাণে। যারা গরুর মাংস একেবারেই খাচ্ছেন না তাদের পেশীতে কারনোসাইনের পরিমাণ দ্রুত কমতে থাকে। আবার এর পরিমাণটা ঠিকঠাক থাকলে অল্প পরিশ্রমেই প্রচণ্ড ক্লান্তি এসে ভর করবে না। মানব দেহের ২০টি প্রমাণ অ্যামিনো অ্যাসিডের মধ্যে, নয়টি (হিস্টিডিন, আইসোলিউসিন, লিউসিন, লাইসিন, মেথিওনিন, ফেলাইন অ্যালানিন, থ্রিয়োনিন, ট্রিপ্টোফ্যান এবং ভ্যালিন) কে অত্যাবশ্যক অ্যামিনো অ্যাসিড বলা হয়, আর এর মধ্যে ৮টিই গরুর মাংসে পাওয়া যায়। গরুর মাংসে আরও কিছু উপকারী বায়ো-অ্যাকটিভ উপাদান ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট পাওয়া গেছে। ঘাষ খাওয়া গরুর মাংসে ওমেগা-থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিডও পাওয়া যায় প্রচুর, যা কিনা হৃৎপিণ্ডের জন্য উপকারী, এতে আবার ভিটামিন এ ও ই-ও রয়েছে। এ ছাড়া গরুর মাংসে থাকা ক্রিয়েটাইন আপনার পেশীর শক্তি যোগাবে। প্রাকৃতিক খাবার খেয়ে বড় হওয়া গরুর মাংসে থাকে ডায়েটারি কোলেস্টেরল। যা রক্তের কোলেস্টেরল বাড়ায় না। এতে উপস্থিত ফ্যাটি এসিডের মধ্যে রয়েছে স্টিয়ারিক এসিড, ওলিক এসিড ও পামিটিক এসিড। গরুর মাংসে ট্রান্স ফ্যাটও রয়েছে, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে কনজুগেটেড লিনোলেয়িক এসিড। এই ফ্যাটি এসিডটি ওজন কমাতে সাহায্য করে।

আবারো চলছি মাংস খাওয়ার ক্ষেত্রে কিছু সতর্কতা অবলম্বন করলে আর তেমন সমস্যা হবে না।

কোরবানীর অর্থনৈতিক হিকমত

আর্থিক দিক দিয়ে দেখলে কোরবানির কারণে অনেক মানুষ লাভবান হয় বিশেষ করে খামারি ও কৃষকরা। কোরবানিকে ঘিরে কসাই, কামার, চামড়া ও হাড় ব্যবসায়ী, পরিবহণ, পশু বিক্রয়, দালাল, পশুর খাবার, ফ্রিজ ব্যবসায়ী, খামারি, কৃষক, মসলা, রান্নার অন্যান্য সামগ্রী, পশুর হাট, এতিম খানা, মাদ্রাসা, লবণ শিল্প, টোল, বখশিশ, বাঁশ-খুঁটির ব্যবসা ইত্যাদি সব মিলিয়ে বাংলাদেশে পায় ৭০/৮০ হাজার কোটি টাকার বেশি লেনদেন হওয়া কোনো বেপারই হওয়ার কথা না। এই কোরবানির উছিলায় অনেক গরিব আর্থিক ভাবে স্বচ্ছ হয় বা লাভবান হয়। শুধু তাই না, যে গরিবরা পুরো বছর মাংস খেতে পারেনা তাদের বাসায়ও কোরবানির উছিলায় অন্তত এক সপ্তাহ একটানা মাংস খাওয়ার মত পর্যাপ্ত পরিমাণে মাংস চলে যায়। কোরবানির কারণে দেশের অর্থনীতিতে ব্যাপক প্রভাব পড়ে। 

ইসলামে কোরবানিকে কেন্দ্র করে দান ও মাংস বিতরণ করাকে অনেক বেশি প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। কোরবানির পশুর চামড়াসহ কোন কিছুই কোরবানিকারী বিক্রি করে তা থেকে আয় করতে পারে না, যদি বিক্রি করে তাহলে অবশ্যই সেই টাকা সম্পূর্ণ সদকা করে দিতে হয়। কোরবানির মাংস শুধু মুসলিমদের মধ্যেই নয় বরং অমুসলিমদেরকেও দেওয়া যায়। কোরবানিতে যারা পরিশ্রম করে থাকে টাকার বিনিময়ে যেমন কসাই বা অন্য কেউ তাদেরকে টাকার বিনিময়ে মাংস দেওয়া যায় না বরং তার সঠিক পারিশ্রমিকটা তাকে দিতে হবে, তারপর যদি মনে চায় তাহলে মাংসও দিতে পারবে। কিছু রেফারেন্স দিয়ে বলি -

কুরবানির গোশতের এক তৃতীয়াংশ গরীব-মিসকিনকে এবং এক তৃতীয়াংশ আত্মীয়-স্বজন ও পাড়া-প্রতিবেশীকে দেওয়া ও এক তৃতীয়াংশ নিজের জন্য রাখা উত্তম। অবশ্যই অনেক আলেম এই কাজ করাকে ওয়াজিব বলে মনে করতেন বা করেন। ইবনে তাইমিয়া এক তৃতীয়াংশ থেকে বেশি দান করার জন্য উপদেশ দিয়েছে। [1] 
কুরবানীর গোশত অমুসলিমকে দেওয়া জায়েয। [2] 
তোমরা মুসলমানদের কুরবানী থেকে মুশরিকদের আহার করাবে না মর্মে যে হাদীছ এসেছে তা যঈফ [3] 
জবাইকারী, কসাই বা কাজে সহযোগিতাকারীকে চামড়া, গোশত বা কুরবানির পশুর কোনো কিছু পারিশ্রমিক হিসেবে দেওয়া জায়েয হবে না। অবশ্য সঠিক পূর্ণ পারিশ্রমিক দেওয়ার পর পূর্বচুক্তি ছাড়া শুধু দানের নিয়তে হাদিয়া সরূপ গোশত বা তরকারি দেওয়া যাবে। [4] 
কুরবানির চামড়া কুরবানিদাতা নিজেও ব্যবহার করতে পারবে। কোরবানিদাতা কোরবানি পশুর কিছুই বিক্রয় করতে পারবে না। সেগুলি সদকা করতে হবে। যদি অন্য কেউ বিক্রি করে টাকা আপনাকে দেয় তাহলে নিয়ত যা-ই হোক বিক্রিলব্ধ অর্থ পুরোটাই সদকা করে দেওয়া জরুরি। টোকাইরা বাড়ি বাড়ি থেকে হাড় সংগ্রহ করে তাদের কাছে বিক্রি করে। এদের ক্রয়-বিক্রয় জায়েয। এতে কোনো অসুবিধা নেই। কিন্তু কোনো কুরবানিদাতার জন্য নিজ কুরবানির কোনো কিছু এমনকি হাড়ও বিক্রি করা জায়েয হবে না। কুরবানির গোশত, চর্বি ইত্যাদি বিক্রি করাও জায়েয নয়। বিক্রি করলে পূর্ণ মূল্য সদকা করে দিতে হবে। যদি কোরবানির পশুর দুধ দোহন করে ফেলে তাহলে তা সদকা করে দিতে হবে। নিজে পান করে থাকলে মূল্য সদকা করে দিবে। [5] 
কুরবানির পশু কেনার পর বা নির্দিষ্ট করার পর তা থেকে উপকৃত হওয়া জায়েয নয়। যেমন হালচাষ করা, আরোহণ করা, পশম কাটা ইত্যাদি। সুতরাং কুরবানির পশু দ্বারা এসব করা যাবে না। যদি করে তবে পশমের মূল্য, হালচাষের মূল্য ইত্যাদি সদকা করে দিবে। [6] 
বিগত বছরের কাজার নিয়তে কোরবানি করা যাবে না। করলে গোস্ত সবগুলো সদকা করে দিতে হবে। [7] 
হাকীকী মান্নতের (গোস্ত গরিবদের মাঝে বণ্টন করে দেয়া মাকসাদ) জবাই করা বা কোরবানি করা পশুর গোস্ত মানতকারীর জন্য খাওয়া জায়েজ হবে না। মান্নাতের গোশত পুরাটাই সদকা করে দিতে হবে। নিজে বা নিজের ঊর্ধ্বতন আত্মীয় বাবা ,দাদা, অধস্তন আত্মীয় ছেলে,মেয়ে ইত্যাদি কে দেওয়া যাবে না এবং কোন ধনী কেও দেওয়া যাবে না। মান্নতের চামড়ার ও এই একই বিধান। [8]

কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণায় দেখা গেছে, বর্তমানে বাংলাদেশে সম্ভাবনার মাত্র ২০% গোশত উৎপাদিত হচ্ছে। সম্ভাবনার শতভাগ উৎপাদন ও প্রতি কুরবানিতে পশুর ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করা গেলে দেশে পশুসম্পদ খাতে রীতিমতো বিপ্লব সাধিত হতে পারে। হতে পারে আরো লক্ষ লক্ষ নারী-পুরুষের কর্মসংস্থান। কোরবানির চামড়ার মূল্য দরিদ্রদের অধিকার। কোরবানির চামড়ার প্রকৃত মূল্য পেলে গরিবের ঘরে যেত অন্তত কয়েক শত কোটি টাকা। কুরবানির ফলে দেশে ১ দিনে কোটি পশুর চামড়া পাওয়া যায়। বাংলাদেশে রপ্তানি খাতে চামড়ার অবস্থান তৃতীয়। কোরবানির ওপর ভর করেই টিকে আছে বিপুল সম্ভাবনার এ খাতটি। ২০১৬-২০১৭ অর্থ বছরে চামড়া খাতে রপ্তানি আয় ছিল ১২৩ কোটি ৪০ লাখ ডলার কিন্তু পরবর্তীতে চামড়া খাতে রপ্তানি থেকে আয় কমে যায় বাংলাদেশের, এর কারণ সিন্ডিকেট ও চামড়ার সঠিক মূল্য না দেওয়া। ২০১৭ -২০১৮ অর্থ বছরে আয় অস্বাভাবিক কমে ১০৮ কোটি ৫৪ লাখ ডলারে দাড়ায়। ২০১৯-২০২০ অর্থ বছরে ১১ মাসের হিসাবে রপ্তানি আয় দাঁড়িয়েছে মাত্র ৭৪ কোটি ডলার। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্যমতে, ২০২১ সালের বছরের জুলাই মাস থেকে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মধ্যেই ৭৮ কোটি ৪৯ লাখ ডলারের চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রফতানি হয়েছে দেশ থেকে। [9] দুঃখজনক, আমাদের দেশে চামড়া দিয়ে তৈরি পণ্যের দাম অনেক বেশি হলেও চামড়ার মূল্য অনেক কম।

সরকারি নিয়ম অনুসারে, প্রতিটি গরু-মহিষের জন্য ৫০০ টাকা, দুম্বা বা ছাগলের জন্য ২০০ টাকা এবং উটের জন্য ৬ হাজার টাকা রাজস্ব দিতে হয়। শুধু এই ১০ লাখ ৩০ হাজার গরু থেকেই সরকার রাজস্ব পাওয়ার কথা প্রায় ৫২ কোটি টাকা। ২০২০ সালে করনাকালিন সময়ে কোরবানির মৌসুমে জুলাই মাসে রেমিট্যান্স ২০০ কোটি ডলার ছাড়ায় প্রবাসীরা রেমিটেন্স পাঠিয়েছেন ১৮২ কোটি ডলার অর্থাৎ প্রায় ১৫ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। ২০২১, ২০২২ সালেও এই সময়ে অনেকটা একই রকম টাকা এসেছিলো। ২০২৩ সালে ঈদুল আজহা উপলক্ষে চলতি মাসের প্রথম ২৩ দিনে ১৭৯ কোটি ৬৬ লাখ মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স দেশে পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। [10]

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ সালে দেশে ৪০ লাখ ৫৩ হাজার ৬৭৯টি গরু-মহিষ এবং ৫০ লাখ ৩৮ হাজার ৮৪৮টি ছাগল-ভেড়া, মোট ৯০ লাখ ৯৩ হাজার ২৪২টি গবাদিপশু কোরবানি করা হয়েছে। [11]। ৪০ লাখ ৫৩ হাজার ৬৭৯টি গরু-মহিষের গড় মূল্য ৮০ হাজার টাকা হলে এতে লেনদেন হয়েছে ৩২ হাজার ৪২৯ কোটি টাকা আর ৫০ লাখ ৩৮ হাজার ৮৪৮টি ছাগল-ভেড়ার গড় মূল্য ১০ হাজার টাকা হলে এ বাবদ লেনদেন হয়েছে ৫ হাজার ৩৮ কোটি টাকা। ২০২১ সালে কোরবানি উপলক্ষ্যে গরু-মহিষ ও ছাগল-ভেড়ায় লেনদেন ৩৭ হাজার ৪৫৭ কোটি টাকা। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, ২০২২ সালে কোরবানি বৃদ্ধি পায় ৭ লাখ। ৯৭ লাখ ৭৫ হাজার কোরবানি হয়। এ ৯৭ লাখ ৭৫ হাজার কোরবানিতে লেনদেন ৪১ হাজার ৭২৯ কোটি টাকার।

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক (খামার) জিনাত হুদা বিবিসি বাংলাকে বলেন, " প্রতি বছর কোরবানির পশু থেকে গড়ে ৫০ থেকে ৫৫ হাজার কোটি টাকার মতো বেচা-বিক্রি হয়। যদি বিক্রি কম হয়, তাহলে তো অর্থনীতির উপর এটি বিরূপ প্রভাব পড়বেই।" রিব মানুষ সারা বছর গরু লালন পালন করে কোরবানির হাটে নিয়ে আসে। কোরবানির পুরো টাকাটাই গরিবের ঘরে যায়। এজন্য সরকারের তরফ থেকে বলা হয়েছে, ঈদ-উল-আজহায় পশু কেনা-বেচা বাংলাদেশের অর্থনীতির একটি খুঁটি। [12]

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের তথ্য মতে, ২০২২ সালে কোরবানির জন্য গরু, ছাগল, ভেড়া ও উট মিলিয়ে ১ কোটি ২১ লাখ ২৪ হাজার ৩৮৯টি প্রাণি প্রস্তুত ছিল। কোরবানি হয় ৯৯ লাখ ৫০ হাজার প্রাণী। একদশক আগেও চাহিদার প্রায় অর্ধেক আমদানি করত বাংলাদেশ। গত ৪ বছরে কোরবানির জন্য কোনো প্রাণী আমদানি করতে হয়নি। কোরবানির প্রাণীর চাহিদা পূরণে দেশ এখন স্বয়ংসম্পূর্ণ। [13]

আমি যা যা বলেছি তার চেয়েও বহুগুণ বেশি জানতে পারবেন অনলাইনে খুজলে। কোরবানির অর্থনৈতিক গুরুত্ব অনেক অনেক বেশি যা কল্পনাও করা যায় না।

কিন্তু সমস্যা হচ্ছে মিডিয়া ও বিত্তবানদের টার্গেট থাকে কুরবানির পশুর বাজার (দর) কম রাখা। এ জন্য চালানো হয় নানা প্রপাগান্ডা। কুরবানির পশুর মূল্য একটু বেশি হলে কুরবানিদাতাদের তেমন কিছুই হবে না, কিন্তু একটি খামারি বা কৃষক পরিবার সারা বছরের ডালভাতের নিশ্চয়তা পাবে। অন্যদিকে বাজার মন্দা হলে বিত্তবানেরা খুশিতে বগল বাজালেও, হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রমকারী দরিদ্র চাষীরা একেবারে পথে বসে যায়। আমাদের দেশে বেকারত্ব অনেক বেশি কিন্তু চাকরির পরিমাণ অনেক কম, যার কারণে পতি বছন অসংখ্য যুবক-যুবতি পশু পালন ও কৃষি কাজের কিছু শিক্ষাগ্রহণ করে তারপর বিভিন্ন ধরনের পশু লালন পালন করা শুরু করে ও পরবর্তীতে সেগুলার দুধ, ডিম, বাচ্চা বা পশু বিক্রি করে অর্থ উপার্জন করে। এই কাজে লাভবান হয়ে সচ্ছল হয়েছে এমন হাজারো নজির আছে বাংলাদেশে।

কোরবানির সুফলটা মূলত প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে গরীব-অসহায়দের কাছে গেলেও অনেকে সর্বশক্তিমানের দেয়া শাশ্বত বিধানের বিষয়ে অজ্ঞতার কারণে কোরবানি না দিয়ে দান করতে বলেন। অথচ যে মানুষেরা অসহায়দের ২০ টাকা দামের ১ কেজি আলু কিনে দেয় না, তারাও খুশি মনে হাজার হাজার টাকার গোশত বিতরণ করেন। এই কোরবানির উছিলায় প্রতি ব্যক্তির কোরবানি করার মাধ্যমে অন্তত ৫ ধরনের মানুষ লাভবান হয়। আর এটাই ইসলামের সৌন্দর্য। অবশ্যই সব বয়সের পশু ও সব ধরনের পশু কোরবানি করা যায় না, এতে কিছু বিধিবিধান রয়েছে। কেউ যদি কোন কারণে পশু ক্রয় করার পর কোরবানি না করতে পারে তাহলে সে পশুটিকে সদকা করে দিবে।

কেউ যদি কুরবানির দিনগুলোতে ওয়াজিব কুরবানি দিতে না পারে তাহলে কুরবানির পশু ক্রয় না করে থাকলে তার উপর কুরবানির উপযুক্ত একটি ছাগলের মূল্য সদকা করা ওয়াজিব (হানফি মাযহাব)। আর যদি পশু ক্রয় করেছিল, কিন্তু কোনো কারণে কুরবানি দেওয়া হয়নি তাহলে ঐ পশু জীবিত সদকা করে দিবে। কোনো কারণে ব্যক্তি নির্ধারিত তিন দিনের একদিনও কুরবানি করার সুযোগ পাননি। এক্ষেত্রে ওই পশু দান করে দাও। যদি জবাই করে থাক তাহলে ওর সম্পূর্ণ মাংস দান করে দাও। যদি মাংসের দাম পশুর দামের চেয়ে কম হয়ে যায় তাহলে বাকি টাকাও দান করে দাও। [14] 

হানফি মাযহাব সহ অন্য মাযহাবের অনেক আলেমদের মতে মৃতের পক্ষ থেকে কুরবানি করা জায়েয। মৃত ব্যক্তি যদি অসিয়ত না করে থাকে তবে সেটি নফল কুরবানি হিসেবে গণ্য হবে। কুরবানির স্বাভাবিক গোশতের মতো তা নিজেরাও খেতে পারবে এবং আত্মীয়-স্বজনকেও দিতে পারবে। আর যদি মৃত ব্যক্তি কুরবানির অসিয়ত করে গিয়ে থাকে তবে এর গোশত নিজেরা খেতে পারবে না। গরিব-মিসকিনদের মাঝে সদকা করে দিতে হবে। [15] 

আবার অনেক আলেম বলেছেন মৃত ব্যক্তির পক্ষ থেকে কোরবানি করলে তা সম্পূর্ণ সদকা করে দিতে হবে। [16] 

বাচ্চা পশু কোরবানি দেওয়া নিষিদ্ধ। উট কমপক্ষে ৫ বছরের হতে হবে। গরু ও মহিষ কমপক্ষে ২ বছরের হতে হবে। আর ছাগল, ভেড়া ও দুম্বা কমপক্ষে ১ বছরের হতে হবে। তবে ভেড়া ও দুম্বা যদি ১ বছরের কিছু কমও হয়, কিন্তু এমন হৃষ্টপুষ্ট হয় যে, দেখতে ১ বছরের মতো মনে হয় তাহলে তা দ্বারাও কুরবানি করা জায়েয। উল্লেখ্য, ছাগলের বয়স ১ বছরের কম হলে কোনো অবস্থাতেই তা দ্বারা কুরবানি জায়েয হবে না। [17] 

হানফি মাযহাবসহ অন্য মাযহাবের অনেক আলেমদের মতে গর্ভবতী পশু কোরবানি করা মাকরুহ। ২ মাযহাবের আলেমদের মতে জায়েজ, আবার শাফেই মাযহাব সহ আরো অন্য মাযহাবের কিছু আলেমের মতে গর্ভবতী পশু দ্বারা কোরবানি করা যাবেই না। কিন্তু ভুলে যদি গর্ভবতী কোরবানি করা হয়ে যায় তাহলে কোরবানি হয়ে যাবে ও পশু জবাইয়ের পর যদি পেটে বাচ্চা জীবিত পাওয়া যায় তাহলে সেটাও জবাই করতে হবে। যদি কোরবানির আগে বাচ্চা দেয় পশু তাহলে বাচ্চা পশুকে সদকা করে দিবে বা জবাই করে দিবে। দুধ দেয় এমন পশু জবাই অনুত্তম। প্রসবের সময় আসন্ন হলে সে পশু কোরবানি করা যাবে না। [18]

আর ময়লা আবর্জনা হওয়ার কথা যদি বলি আসলে সেটা কোরবানি ছাড়াও হয়। আবার এসব ময়লা আবর্জনা দিয়ে অনেক কিছু করা যায়। যেমন জৈব সার তৈরি, বায়োগ্যাস উৎপাদন, ময়লা থেকে বিদ্যুৎ ইত্যাদি। কিন্তু সেগুলার জন্য উদ্যোগ নিতে হয় ও সঠিকভাবে তা পরিচালনা করার জন্য সরকারের তরফ থেকে সাহায্যের প্রয়োজন হয়। এছাড়া বৃষ্টির কারণে তৈরি হওয়া জলাবদ্ধতার কারণে যেমন বৃষ্টি হওয়াকে দোষ দেওয়া যায় না ঠিক তেমনই কুরবানির সময় ময়লা আবর্জনা হওয়ার কারণে কুরবানিকে দোষ দেওয়া যায় না। উভয় ক্ষেত্রেই যদি এলাকার দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি নিজের দায়িত্ব ঠিকমতো পালন করে তাহলে আর কোন সমস্যার তৈরি হওয়ার কথা না। কিন্তু উন্নত দেশে কোরবানির কারণে কোন সমস্যা হয় না বরং তারা এর মাধ্যমে সব ধরনের ফায়দা গ্রহণ করতে পারে। 

তারপরও মুসলিমরা অধিক পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকার চেষ্টা করে কারণ পাক-পবিত্রতা হলো ইমানের অর্ধেক ও পবিত্রতা ইমানের অঙ্গ। [19]

পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা সম্পর্কে আরো বলা হয়েছে[20]

কোরবানী নিয়ে যারা উল্টা পাল্টা কথা বলে তাদের আসল চরিত্র

অমুসলিমরা কোরবানী করে বিশেষ করে কিছু পাওয়ার উদ্দেশ্যে। তারা পশু উৎসর্গ করে যাতে তাদের দেব দেবী খুশি হয়ে তাদের মনের আশা পূরণ করে দেয়। এখানেই মুসলিম-অমুসলিমদের মধ্যে পার্থক্য।

বেশি লাফালাফি করে নাস্তিকরা। তারা কোরবানীকে অমানবিক, পশুহত্য, জীবহত্যা, নিষ্ঠুরতা ইত্যাদি উপাদি দিয়েছে। তাদের মতে কোরবানী খারাপ, এর মধ্যে ভালো কোন কিছু থাকতে পারেনা। উপরের আলোচনায় দেখিয়ে দিলাম কোরবানীর উপকারিতা সম্পর্কে। কিন্তু আসল সমস্যা আমাদের এই নাস্তিক ভাই-বোনেরা নিজেরা সারাবছর হাঁস, মুরগি, মাছ, খাশি, পাঠা, মহিষ, দুম্মা, ভেড়া, উট, গরু, শুকর, কুকুর ইত্যাদির বিরিয়ানি, কাবাব, কালা ভুনা, রসা ভুনা, কারি, মেজবান, বারবিকিউ, সোরমা, কোর্মা, ভুনা, গ্রিল, রোষ্ট, ভাজি, কিমা, রেজালা, কাকলেট, কারি, তেহেরি, নেহারি, চাপ, হালিম ইত্যাদি সব আইটেম খায় অথচ সেই সময়ে তাদের পশুপ্রেমিতা থাকে না কিন্তু কোরবানী ও বলির সময়ই তাদের সমস্যা। নাস্তিকদের এই সিজনালী পশুপ্রেমিতা এগুলা চরম ভন্ডামি ও ডাবল স্ট্যান্ডার্ড ছাড়া কিছুই না। এছাড়া সারা দুনিয়াতে যে কোরবানি ছাড়া এত এত মাছ, গরু, মহিষ, ছাগল, হাঁস, মুরগি, অন্যন্যা পাখি, শূকর, দুম্বা, ভেড়া, উট ইত্যাদি খাওয়ার জন্য, প্রসাধনির জন্য, বিভিন্ন পরিক্ষার জন্য হত্যা করা হচ্ছে তাতে কারো মাধা ব্যথ্যা নেই, দেশিয় কোন পশু প্রেমিকে সেখানে পাওয়াও যায় না এসবের বিরোধীতা করতে, খালি কোরবানি আসলেই তাদের পশু প্রেম জেগে উঠে। [21]   

অমুসলিম ভাই-বোনদেরও শুধু কোরবানীতে সমস্যা না, অন্যন্যা ধর্মের বিভিন্ন উৎসব যেগুলাতে পশু বলি দেওয়া হয় সেগুলিতে তারা সমস্যা দেখা যায়। এখনো অনেক ধর্মের মানুষ ঈশ্বরের নামে মানুষ বলি দেওয়ার রীতি পালন করে। কিন্তু ইসলামেত মানুষ বলি দেওয়া জায়েজ নেই।

কিছু নামধারী মুসলিম ও অমুসলিম বলে কোরবানী না করে সেই টাকা গরিবকে দিলে অনেক ভাল হবে। এই ধরনের মুসলিমরাই আবার নিজেদের যাকাত ঠিক মত দেয় না। আর অমুসলিমদের কথা কি বলব তারা অনেক যায়গায় টাকা নষ্ট করে শুধু শুধু কিন্তু তখন গরিবদের কথা তাদের মাথায় আসে না। এই ধরনের মানুষরা নববর্ষের নামে, শহীদমিনারে ফুল দেওয়ার নামে, জন্মদিনের নামে, বন্ধুদেরকে ট্রিট দেওয়ার নামে, নাইট ক্লাবে, মেয়ে নিয়ে ঘুরাঘুরি, উলটা পালটা জিনিস খেয়ে যে লক্ষ লক্ষ টাকা নষ্ট করছে সেসময় মনে পরে না যে এই টাকা গরিবকে দিলে অনেক ভাল হবে। আর তারা কোরবানীর কারনে গরিবদের যে উপকার হচ্ছে সেই দিকগুলো নিয়ে কখনো চিন্তা করেছে কিনা সন্দেহ আছে।

আবার হিন্দুরা শুধু গরু কোরবানীর কারনে মুসলিমদের উপর খেপা। তারা মনে করে গরু তাদের মা কারন তারা দুধ দেয় ও তাদের ধর্ম গ্রন্থেও লেখা আছে এটা। দুধত উট,ভেড়া,ছাগল, দুম্বা ইত্যাদি প্রাণীরাও দেয় তাই বলে কি তাদেরকে খাওয়া যাবে না নাকি। ভাই মা বলা হয় গাভীকে, পুরুষ গরুকে মা বলা হয় না। এছাড়া হিন্দুদের ধর্মীয় গ্রন্থে অনেক যায়গায় গরু হত্য, দেবতাদের গরু খাওয়া, ভ্রাম্মনদের গরু খাওয়া, গরুকে দেবতাদের নামে উৎসর্গ করা, গোমেধ যজ্ঞের কথা বলা হয়েছে। সেগুলা বিভিন্ন সাইটের অ্যার্টিকেলে উপস্থাপন করা আছে দেখে আসতে পারেন।

হিন্দুদের ধর্মগ্রন্থেই বার বার বলা হয়েছে পশু হত্যা পাপ কিন্তু তারা তারপরও সব পশুর মাংস খায় শুধু গরুর মাংস ছাড়া। যারা নিজ ধর্ম ঠিকমত মানেনা তারা আমাদের ধর্ম নিয়ে ফতুয়াবাজি করে।

বৌদ্ধরাত প্রাণী হত্যাকেই মহাপাপ মনে করে তাই তারা সব ধর্মকেই অস্বীকার করে। ইহুদি-খ্রিষ্টানদের থেকে তেমন কোনো অভিযোগ পাওয়া যায় না এ বিষয়ে। কারন তারা সব কিছুই খায় ও সবচেয়ে বেশি খায়। অন্যান্য মুসলিম দেশগুলোর তুলনায় অমুসলিম দেশগুলোতেই বেশি মাংস খাওয়া হয়।

অনেক অমুসলিমদের ধর্মীয় সংস্কৃতি আছে যেখানে গশুকে অনেক বেশি কষ্ট দিয়ে হত্যা করা হয়। যেমন- কোন এক সম্প্রদায়ের একটি উৎসব হল চারদিক থেকে মানুষ ধারালো অস্ত্র পশুর দিকে নিক্ষেপ করতে থাকে যতক্ষন না সেই পশু মারা না যায়, পশুকে বেঁধে তার চারপাশে মানুষ নাচতে থাকে ও বল্লম দিয়ে আঘাত করতে থাকে যতক্ষন সেই পশু মারা না যায়। ইয়াহুদীদের একটি গোত্র প্রতি বছর হাজার হাজার মুরগিকে পাথর মেরে হত্যা করে। তাদের আক্বীদাহ্ হলো এভাবে পাথরের উপর মুরগী হত্যা করা হলে তাদের গুনাহ্ মাপ হয়ে যায়। ডেনমার্কে প্রতি বছর সাগরের মধ্যে শত শত ডলফিনকে হত্যা করা হয়, এমন কি সমুদ্রের পানি পর্যন্ত তাদের রক্তে লাল হয়ে যায়, তখন তার বলে- এটি একটি উৎসব। স্পেনে ছুরি-চাকু দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে যখন হাজার হাজার ষাঁড়কে হত্যা করা হয় তখন তারা বলে- এটি তো একটি খেলা। এছাড়া আরো অনেক আছে যেগুলো প্রকাশ করার মত না, চাইলে প্রাণী নির্যাতন সম্পর্কে কিছু ধারনা পেতে এই লিখাগুলো পড়তে পারেন [22]। কিন্তু ইসলামে এমন অমানবিক কাজ করা কখনো যায়েজ না। তারপরও একদল শুৃধু ইসলাম নিয়েই নিজের চুলকানি প্রকাশ করে। চাইলে এটা পড়তে পারেন এখানে আরো অনেক কিছু নিয়ে আলাপ আলোচনা করা হয়েছে। [23]

তথ্যসূত্রঃ-

[1] বাদায়েউস সানায়ে ৪/২২৪; আলমগীরী ৫/৩০০; রাদ আল-মুহতার ৯/৪৭৪; নাইলুল আওতার ৫/১৪৫, আস্‌-সিরাজুল ওয়াহ্‌হাজ ৫৬৩; আল-মুগনী ৮/৬৩২; মির‘আত ৫/১২০; ইবনে তাইমিয়া, মাজমু‘আল-ফাতাওয়া, ১৯/২৫৮

[2] ইরওয়া ৮১১; তিরমিযী ১৯৪৩; আল-আদাবুল মুফরাদ ১০৪, ১২৮; ইলাউস সুনান ৭/২৮৩; ফাতওয়ায়ে আলমগীরী ৫/৩০০; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/৩০০; আল-মুগনি ১১/১০৯; আহসানুল ফাতাওয়া ৭/৪৯৬; ইমদাদুল ফাতাওয়া ৩/৫৫০; ফাতহুল বারী ১০/৪৪২; ফাতাওয়া লাজনা দায়েমাহ ১১/৪২৪

[3] বায়হাক্বী, শুআবুল ঈমান ৯১১৩ আত তাহরীক ০৮:২০১৯ ফাতাওয়া নং ২৯:৪২৯

[4] সহীহ মুসলিম, হাদীস ১৩১৭; বাদায়েউস সানায়ে ৪/২২৪; কিফায়াতুল মুফতী ৮/২৬৫; আহকামুল কুরআন জাস্সাস ৩/২৩৭; আলবাহরুর রায়েক ৮/৩২৬; আলমুহীতুল বুরহানী ৮/৪৭১; ফাতহুল বারী ৪/৬৫০; আদ্দুররুল মুখতার ২/৬১৬; হাশিয়াতুল শিলবী আলা তাবয়ীনিল হাকায়েক ৬/৪৮৬; আল-মুগনী, ১১/১১০

[5] আহমাদ, মির‘আত ৫/১২১; সহীহুল জামি, হাদীস ৭৫২১; ইলাউস সুনান ১৭/২৫৯, ২৭৭; রদ্দুল মুহতার ৬/৩২৯; কাযীখান ৩/৩৫৪; আলমগীরী ৫/৩০১; বাদায়েউস সানায়ে ৪/২২৫; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/ ৩০০,৩০১; আল-মুগনী ১১/১১১

[6] মুসনাদে আহমদ ২/১৪৬, নায়লুল আওতার ৩/১৭২, ইলাউস সুনান ১৭/২৭৭, কাযীখান ৩/৩৫৪, আলমগীরী ৫/৩০০

[7] ফাতাওয়া খানিয়া ৩/৩৪৯; রদ্দুল মুহতার ৬/৩২৬

[8] ইলাউস সুনান হাদিস নং ৩০২৩, ফাতাওয়া কাযীখান ৩/২৪৯, ৩৫১, ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১৭/৪১৫, ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/৩০৪; আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩১৭; আহসানুল ফাতাওয়া-৭/৫২৫-৫২৮; আল ইখতিয়ার ৫/১৮; আল জাওহারাতুন নায়্যিরহ ২/৩২৮

[9] দৈনিক সময়ের আলো: ৬ মার্চ, ২০২২; দৈনিক ইত্তেফাক, ২৯ জুলাই ২০২০; দৈনিক যুগান্তর, ১৪ আগস্ট ২০১৯

[10] নিউজ টিভি ২৫ জুন ২০২৩; বিডিনিউজ, ৩১ জুলাই ২০২২

[11] প্রথম আলো: ২৪ জুলাই, ২০২১

[12] বিবিসি বাংলা, ঢাকা, ১৭ জুলাই ২০২১

[13] নয়া দিগন্ত, ২৭ জুন ২০২৩

[14] বাদায়েউস সানায়ে ৪/২০২ ও ২০৪, ফাতাওয়া কাযীখান ৩/৩৪৫, আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩২০-৩২১

[15] মুসনাদে আহমদ ১/১০৭, হাদীস ৮৪৫; ইলাউস সুনান ১৭/২৬৮; রদ্দুল মুহতার ৬/৩২৬; কাযীখান ৩/৩৫২

[16] তিরমিযী তুহফা সহ, ১৫২৮, ৫/৭৯; মিরআত ৫/৯৪

[17] সহীহ মুসলিম ১৯৬৫, বুখারি ই. ফা. ৫০৪৫; সুনানে আবু দাউদ ২৭৯৯; সুনানে ইবনে মাজাহ ৩১৩৯; সুনানে নাসায়ী ৪৩৭৮; কাযীখান ৩/৩৪৮; বাদায়েউস সানায়ে ৪/২০৫-২০৬; ফাতাওয়াল লাজনাদ দায়িমা ১১/৩৭৬

[18] সুনান আবূ দাউদ ২৮২৭; আবু দাউদ- ৪৫৭৯; সুনানে তিরমিজী, হাদীস ২৩৬৯; কাযীখান ৩/৩৪৯, ৫০; আলমগীরী ৫/৩০১; রদ্দুল মুহতার ৬/৩২৩; ফাতাওয়ায়ে মাহমুদিয়্যাহ-১৭/৩৫৩; ফতোয়ায়ে হিন্দিয়া ৫/২৮৭; আল-মাওসুআ আল-ফিকহিয়্যা ১৬/২৮১; আল-মুগনী ৯/৩২১; আলা আল-খতীব ৪/৩৩৫

[19] সহীহ মুসলিম, হাদীস ৫৫৬; সুনানে বায়হাকী কুবরা, হাদীস ১৮৫; মুসলিম ২২৩; মুসনাদে আহমাদ ৫/৩৪২-৪৩, ২৯০২

[20] সহীহ মুসলিম, হাদীস ৩৫, ৯১, ২৬১, ৪২৪; আমালুল ইয়াউমি ওয়াল লাইলাহ, হাদীস ১৭৩, সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ২৫, ৪০৬২, ৫২৪৩; মুসনাদ আহমদ, হাদিস ৮৮৫৩, ১৪৮৫০; তিরমিজি, হাদিস ২৭৯৯; বাইহাকি, হাদিস ৫৮১৩; বুখারি, হাদিস ২৩৯, ৩৩১৬, ৮৭৯

[21] কুরবানিতে এতো চুলকানী কেন...

[22]  এনিমেল এবিউজ , এনিমেল এবিউজ 2 

[23] কুরবানীর ঈদ অমানবিক? ; কুরবানী বিরোধিতা নাকি ইসলামবিদ্বেষ?মুসলমানদের কোরবানি ঈদ এবং একজন আরজ আলি মাতব্বরের অযাচিত মাতবরি!

Ashraful Nafiz

I am an ordinary Muslim student who is interested in acquiring the beneficial knowledge given by Allah and hopes to spread that knowledge among the people. facebook youtube twitter instagram quora

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Would you tell me something

নবীনতর পূর্বতন