স্রষ্টাকে দেখা যায় না কেন? স্রষ্টা অলৌকিক কিছু করেন না কেন যাতে সবাই তাকে বিশ্বাস করে?

রিয়ালিটি শুধু মাত্র আমাদের পঞ্চইন্দ্রিয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। আমরা যা কিছু পর্যবেক্ষণ করি শুধু মাত্র তার অস্তিত্ব আছে এই ধারণা ভুল। আমরা যা কিছু পর্যবেক্ষণ করি তা ফিজিক্যাল ওয়ার্ল্ডে অস্তিত্বশীল। কিন্তু এর বাহিরে অনেক কিছুই অস্তিত্বশীল। যেমন চিন্তা-চেতনা, আবেগ, ভালোবাসা, বিশ্বাস, শক্তি, মহাকর্ষ বল, অভিকর্ষজ বল, রেখা, সংখ্যা, বিশ্বাস, শক্তি, তরঙ্গ, আলো, প্রকৃতি, কোয়ান্টাম কণা, অ্যান্টিম্যাটার, ডার্ক ম্যাটার, রেডিও ওয়েভ, অক্সিজেন, অতিবেগুনি, আলফা, গামা, বিটা রশ্মি, সৃষ্টিকর্তা ইত্যাদি।

Table of Contents

{tocify} $title={Table of Contents}

বিজ্ঞান কি বলে?

রিয়ালিটি বা অস্তিত্ব শুধু মাত্র আমাদের পঞ্চইন্দ্রিয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয় কারন এমন অনেক কিছুই আছে যেগুলার অস্তিত্ব আছে কিন্তু তা আমরা পঞ্চইন্দ্রিয়ের মাধ্যমে বুঝতে পারিনা। 

আমেরিকান নাস্তিক জোতির্বিদ নিল ডিগ্রাস টাইসন বলেন, “বর্তমানে মানুষ যদি নিজের ইন্দ্রিয় দিয়ে সমস্তকিছু জাস্টিফাই করে তাহলে তার জন্য অনিশ্চিত জীবন অপেক্ষা করছে।” [Neil deGrasse Tyson (2001), Coming to Our Senses, Natural History Magazine, March 2001, page 84]
বাইরে যে একটা জগৎ আছে, এই বিশ্বাসী বিজ্ঞানীদের বিশ্বাস কিন্তু ইন্দ্রিয় অনুভূতি নির্ভর নয়। আমেরিকার দার্শনিক জর্জ সান্তায়না এই ধরনের বিশ্বাসকে বলেছেন “অ্যানিমেল ফেইথ।” অর্থাৎ, সহজাত একটা বিশ্বাস। [Griffin, David Ray, ‘Interpreting Science from the Standpoint of Whiteheadian Process Philosophy’, in Philip Clayton (ed.), The Oxford Handbook of Religion and Science, page 458 (2008; online edn, Oxford Academic, 2 Sept. 2009)]

বিজ্ঞানের এর দনিয়ায় শুধু যুক্তি ও প্রমাণ ভিত্তিক এবং এখানে বিনা বিচারে কোনো কিছুই গ্রহণ করা হয় না এমন কিন্তু না।

বৈজ্ঞানিক মহলে আরও কিছু ধারণা জেঁকে বসে আছে মেলা দিন হলো। বিজ্ঞানী রুপার্ট শেল্ড্রেক স্বীয় গ্রন্থে এমন দশটি বিশ্বাসকে তালিকাবদ্ধ করেছেন। গবেষণায় দেখা গেছে এই প্রতিটি বিশ্বাসেরই ব্যত্যয় ঘটেছে, বিপরীতে প্রমাণ মিলেছে। [Rupert Sheldrake, Science Set Free : 10 Paths to New Discovery; introduction (epub version, New York, Deepak Chopra Books 2012)], ক্যালিফোর্নিয়ার প্রগ্রেসিভ সাইন্স ইন্সটিটিউট-এর পরিচালক, নাস্তিক বিজ্ঞান-দার্শনিক গ্লেন বরচার্ড The Ten Assumptions of Science Towards a New Scientific Worldview গ্রন্থে বিজ্ঞানের দশটি দার্শনিক অনুমানকে লিপিবদ্ধ করেছেন। যথা: ১. Materialism ২. Causality ৩. Uncertainty ৪. Inseparability ৫. Conservation ৬. Complementarity  ৭. Irreversibility ৮. Infinity ৯. Relativism ১০. Interconnection

ফিজিক্যাল এক্সিস্টেন্স!

যাইহোক মূল বিষয়ে আসি, সাধারণত নাস্তিকরা স্রষ্টাতে বিশ্বাস করেনা। তাদের স্রষ্টা বিশ্বাস না করার অন্যতম একটি আর্গুমেন্ট হচ্ছে - স্রষ্টাকে যেহেতু আমরা সরাসরি দেখতে পাই না, স্রষ্টা যেহেতু Physically exist করেনা সেহেতু স্রষ্টা থাকার সম্ভাবনা নেই, ‘unseen is nothing’, যা দেখি না তা বিশ্বাস করি না ইত্যাদি ইত্যাদি। চলুন দেখা যাক নাস্তিকদের এই দাবী কতটুকু যৌক্তিক?

আমাদের মধ্যে অনেকে ফিজিক্যাল এক্সিস্টেন্স বা Empirical evidence এর দোহাই দিয়ে স্রষ্টাকে অস্বীকার করে। আবার, Mathematically Abstract entity বা মৌলিক এনটিটি ধরে নেয়। কিন্তু এগুলা তো আমরা সরাসরি দেখতে পারিনা বা এগুলা physically exist করেনা। সংখ্যা বা রেখা এগুলো Physically exist করেনা বা এগুলার কোনো Empirical evidence ও নেই। কিন্তু সাইন্স কেন এগুলা গ্রহণ করে?  

স্রষ্টা হচ্ছে Absolute বা পরম, আদি, অনন্ত, অদ্বিতীয়। মহাবিশ্বে কেউ স্রষ্টার বৈশিষ্ট্যকে অস্বীকার করতে পারেনা। কেউ স্রষ্টার Embodiment হিসেবে God এর যায়গায়, Nature, Nothing, The biggest, The world ইত্যাদি ব্যাবহার করে। আবার তারা এটাও ধরে নেয় যে The biggest অন্য কোনো Biggest থেকে আসতে পারেনা বা Nature অন্য কোনো Nature থেকে আসবেনা। যদি অন্য কোনো Nature থেকে আসতো তাহলে Nature তো আর Nature থাকবেনা। সেটা যেখান থেকে এসেছে সেটাই হবে Nature। আবার Nature এর কিন্তু পঞ্চইন্দ্রিয়ের মাধ্যমে উপস্থিতি উপলব্ধি করা সম্ভব নয়, এর Physical exist পাওয়া অসম্ভব। চিন্তা করেন যারা এই ধারনা পোষন করে তারাই আবার প্রশ্ন করে স্রষ্টাকে কে সৃষ্টি করল! যাইহোক এটা ভিন্ন টপিক তিাই সেই দিকে যাচ্ছি না, এই বিষয়ে আগের লিখা আছে চাইলে পড়ে দেখতে পারেন। [ আল্লাহকে কে সৃষ্টি করেছে? ]

তাহলে নাস্তিকরাও কিন্তু একটা কিছুকে Absolute, Unlimited, Infinity হিসেবে ধরে নিচ্ছে (যদিও তা আমাদের কাছে Absolute নয়)। সেক্ষেত্রে স্রষ্টার পজিশন কিন্তু ডিফল্ট পজিশন। এই Absolute, Unlimited, Infinity এগুলো তো আমরা অভিজ্ঞতায় পাইনা! এগুলোর তো Empirical কোনো Evidence নেই। তাহলে কেন নাস্তিকরা একটা কিছুকে Absolute, Unlimited, Infinity, Exist হিসেবে ধরে নেয়? অথচ তারাই কিন্তু Empirical evidence এর দোহায় দিয়ে স্রষ্টা’কে অস্বীকার করে। আবার তরাই Empirical evidence ছাড়াই একটা কিছুকে Absolute, Unlimited, Infinity হিসেবে ধরে নিচ্ছে! Mathematically abstract entity বা মৌলিক এনটিটি ধরে নিচ্ছে! অথচ নাস্তিকরা নাকি সোকল্ড বিজ্ঞানমনষ্ক, আবার তারাই কোন কিছুকে প্রমান ছাড়াই Absolute, Unlimited, Infinit, Exist ধরে নিচ্ছে, আবার এই বিজ্ঞানের দোহাই দিয়েই তারা স্রষ্টাকে অস্বীকার করছে। অথচ science এ absolute truth বলতে কিছু নেই, যা আছে সেটা established truth বা approximate truth, absolute truth থাকলে বিজ্ঞান যে পরিবর্তনশীল এটাই contradictory হয়ে যায়।  

আরো একটা উদাহারণ দেওয়া যাক, আমরা যদি ২টি আপেল থেকে ৩টি আপেল বিয়োগ করি তাহলে আন্সার হবে নাই হয়ে একটা আপেল বা -১ আপেল। কিন্তু নাই হয়ে কি কিছু থাকতে পারে? নাই হয়ে ১টা আপেল বা -১ এর ধারণা আমরা কোথায় পায়? এগুলো আমাদের নলেজে দেওয়া থাকে। আমরা যখন বলি একটা আপেল, এখানে ১ মানে আপেল না। ১ হচ্ছে আপেল এর উদাহারণ। পৃথিবী থেকে যদি ১ সংখ্যক সবকিছু তুলে নেওয়া হয় তাহলে কি ১ এর ধারণা কি মুছে যাবে? অবশ্যয় না!  

তাহলে সংখ্যা, রেখা, শক্তি, প্রকৃতি ইত্যাদির বাস্তবতা কিন্তু ফিজিক্যাল না। সুতরাং, Reality is not always physical. Entity is not always physical. Entity’ এর কিছু অংশ Physical বাকি অংশ Metaphysical. প্রশ্ন হচ্ছে আমরা যদি Abstract entity গুলো মানতে পারি তাহলে স্রষ্টার অস্তিত্ব কেন মানতে পারবোনা? একজন নাস্তিক যদি Physical world এর সাথে Abstract entity মেনে নিতে পারে তাহলে স্রষ্টাকে কেন মানতে পারবেনা? এই ধরণের প্রশ্নে নাস্তিকরাও স্বীকার করতে বাধ্য হয় যে এই মহাবিশ্বের একজন স্রষ্টা আছে।  

সুতরাং বলা যায় সকল রিয়েলিটি কিন্তু ফিজিক্যাল না! আমরা শুধু মাত্র Physical exist বা Empirical evidence মেনে নেই না বরং Abstract entity ও মেনে নিচ্ছি। তাহলে কেউ যদি Physical exist বা Empirical evidence এর দোহায় দিয়ে স্রষ্টাকে অস্বীকার করে সেটা হবে তাদের হিপোক্রেসি।  

এবার আলোচনা করা যাক, স্রষ্টা’কে সরাসরি দেখা সম্ভব কিনা তা নিয়ে। স্রষ্টা হচ্ছে Logical conclusion, Abstract entity, Absolute. আমরা হলাম Particular! Particular কি Absolute বা Abstract entity পর্যবেক্ষণ করতে পারবে? উত্তর হল না, কারন মানুষের পক্ষে যেখানে পঞ্চইন্দ্রিয়ের মধ্যে মহাবিশ্বের অস্তিত্ব প্রমান করা সম্ভব নয়, প্রকৃতি, শক্তি, মহাকর্ষ বল, রেখা, সংখ্যা,ইত্যাদিকে দেখা সম্ভব না সেখানে স্রষ্টার মত সত্তাকে দেখা অসম্ভবই ধরা যায়।

(এখানের উপরের কিছু লিখা লেখক সাজ্জাতুল-মওলা শান্ত ভাইয়ের অবলম্বনে লিখা)

ভিজিবল স্পেকট্রাম ও হেয়ারিং রেঞ্জ

আলো কি? আলো হল এক ধরনের শক্তি বা বাহ্যিক কারণ, যা চোখে প্রবেশ করে দর্শনের অনুভূতি জন্মায়। আলো বস্তুকে দৃশ্যমান করে, কিন্তু এটি নিজে অদৃশ্য। আমরা আলোকে দেখতে পাই না, কিন্তু আলোকিত বস্তুকে দেখি। এটি এক ধরনের তরঙ্গ, আলো তির্যক তড়িৎচুম্বকীয় তরঙ্গের আকারে এক স্থান থেকে আরেক স্থানে গমন করে। আবার সব আলোর মাধ্যমে বস্তু আলোকিত হয়ে আমাদেরকে দর্শন দেয় না অর্থাৎ সব ধরনের আলোর মধ্যেমে বস্তু আলোকিত হয়না এবং আমরা তা দেখতে পারি না। 

দৃশ্যমান বর্ণালি বা আলোক বর্ণালি হচ্ছে তড়িচ্চুম্বকীয় বর্ণালীর সেই অংশ যা মানুষের চোখে দৃশ্যমান অর্থাৎ যা মানুষের চোখ চিহ্নিত করতে পারে। এই তরঙ্গ দৈর্ঘ্য সীমার তড়িচ্চুম্বকীয় বিকিরণকে দৃশ্যমান আলো বা শুধু আলো বলে। মানুষের দৃশ্যমান আলোর তরঙ্গ দৈর্ঘ্য হচ্ছে ৩৮০-৭৮০ ন্যানোমিটার এবং এর চেয়ে কম বা এর চেয়ে বেশি তরঙ্গ দৈর্ঘ্যের আলোর কিছু মানুষের পক্ষে দেখা সম্ভব না। পৃথিবীতে এর নিচে ও এর উপরের তরঙ্গ দৈর্ঘ্যে আলোতে অনেক পশু পাখি দেখতে পায়। এই সিমানার বাহিরে এক সুবিশাল জগত রয়েছে কিন্তু তা মানুষের পক্ষে দেখা সম্ভব না।

শুধু মানুষের দৃষ্টিশক্তিই সীমাবদ্ধ নয়, শ্রবণশক্তিও সীমাবদ্ধ। শ্রবণসীমা বলতে মানুষ ও অন্য কোন প্রাণী যে কম্পাংকসীমার শব্দ শুনতে সক্ষম, তাকে বোঝায়। মানুষের শ্রবণশক্তির সীমা হল ২০-২০,০০০ হার্জ। এর চেয়ে কম বা এর চেয়ে বেশি হার্জ এর কোন শব্দই মানুষের পক্ষে শুনা সম্ভব না। এই ক্ষেত্রেও অনেক প্রাণী এর চেয়ে কম বা বেশি হার্জ এর শব্দ শুনতে সক্ষম।

ডাইমেনশনস্

পদার্থ বিজ্ঞানীদের ধারনা আমাদের মহাবিশ্বে অনেকগুলা ডাইমেনশন থাকার সম্ভবনা রয়েছে। বিজ্ঞনীদের থেকে অন্তত ১০টি ডাইমেনশনের ধারনা পাওয়া যায়, অনেক বিজ্ঞানী কম বেশিরও কথা বলেছেন। অথচ, কেওই তা নিশ্চিতভাবে কোনদিনও দেখতে ও পর্যবেক্ষন করতে পারেনি। আমরা সাধারনত ৩ ডাইমেনশনের জীব, আমাদের হায়ার ডাইমেনশনের বৈশিষ্ট্য, ধরনগুলো খুব কমপ্লেক্স বিষয়। ধারনা করা হয় ৫ম ডাইমেনশনের জীব প্যারালাল ইউনিভার্সে ট্রাবেল করতে পারবে, ৬ষ্ঠ ডাইমেনশনে ট্রাইম ট্রাবেল, ৭ম ডাইমেনশনে সবক ইউনিভার্সে ট্রাবেল ইত্যাদি, আর ১০ম বা তার হায়ার ডায়মেনশনে গড লেবের সব কর্মকার্ড করা সম্ভব। সে যাইহোক আশ্চর্যের বিষয় হলো হায়ার ডাইমেনশনের জীব আমাদের ডাইমেনশনে ইজিলি পরিবর্তন করতে পারবে। আমরা তাদের দেখতেও পারবো না আবার অনুভবও করতে পারবো না। এমনকি কল্পনাও করতে পারবো না কিভাবে কী হলো। সামান্য হায়ার ডাইমেন্সনের জীবকে মানুষ যদি দেখতে না পারে তাহলে স্রষ্টাকে দেখতে তাই অসম্ভবেরও অসম্ভব ছাড়া কিছুই না। চিন্তা করুন যে স্রষ্টা এই ডাইমেনশন গুলো তৈরি করেছেন তিনি কতটা পাওয়ারফুল, তিনি কতোটা আলাদা এবং ইউনিক হবেন। এমন একজন অবশ্যই কোন সন্দেহ ছাড়া সব কিছুর ঊর্ধে থাকবেন।

এখন পর্যন্ত দেখা বিজ্ঞানের আধুনিক বর্ণনা অনুসারে, মহাবিশ্বের ৬৮% অন্ধকার শক্তি (Dark Energy), ২৭% গুপ্ত পদার্থ বা অদৃশ্য পদার্থ যেটাকে ইংরেজিতে Dark Matter বলে তা দ্বারা গঠিত (বাকি ৫% দৃশ্যমান ও অন্যান্য পদার্থ দ্বারা গঠিত)। সুতরাং আমরা মহাবিশ্বের ৪/৫% জানতে পারব। অর্থাৎ মহাবিশ্বের ৯৫% অংশকে পরীক্ষা করার মতো উপকরণ বিজ্ঞানের কাছে নেই, যা এখনো বিজ্ঞান মহলে রহস্যের হয়ে আছে। মহাবিশ্বের যে ৪/৫ ভাগ বিজ্ঞান পর্যবেক্ষণ করতে পারবে তার মাত্র ১% অংশও অধিবিদ্যা (Metaphysics) জানতে পারেনি। তাহলে আমাদের পক্ষে যেখানে মহাবিশ্বের ১০০% এর ৫% জানা সম্ভব এবং সেই ৫% থেকে আমরা ১% ও জানতে পারিনাই, সেখানে এত সিমাবদ্ধ জ্ঞান, দৃষ্টিশক্তি, শ্রবণশক্তি দিয়ে স্রষ্টাকে দেখতে চাওয়া পাগলামি বৈ আর কিছুই না! 

বিজ্ঞানে শুধু ডাইমেনশনের বিষয়টাই না, এমন অনেক কিছু আছে যেগুলাকে নাকি মানুষের পক্ষে পর্যবেক্ষণ করা সম্ভব না। আমাদের এই তথাকথিত বিজ্ঞানমনষ্ক নাস্তিকদের জন্য এই বিষয়গুলা খুবই স্বাভাবিক কারন তাদের দেবতা বিজ্ঞান যে বলেছে। এই কান্ডজ্ঞানহীন মানুষকে যদি বলা হয় স্রষ্টাকে দেখা যায় না তখনই তাদের তলানিতে চুলকানি বেড়ে যায়। অথচ সেই স্রষ্টার সৃষ্টি করা জিনিসকে বিজ্ঞান যখন বলে মানুষের পক্ষে দেখা, অনুভব করা, শুনা বা অবযার্ব করা সম্ভব না তখন তাদের চেতনায় সমস্যা হয় না, কনশেন্সে এ তা বাধা দেয় না, জ্ঞানের বলাৎকার হয় না, তাদের সমস্যা হয় শুধু স্রষ্টাকে দেখা যায় না, শোনা যায় না, অনুভব করা যায় না মানে ৫ ইন্দ্রিয় দিয়ে উপলব্দি করা যায় না সে বিষয়টাতেই।

যাইহোক এই কারনেই হয়ত বিজ্ঞানীদের পক্ষে অতিপ্রাকৃতিক বিষয়ে কোন সঠিক ও চূরান্ত সদ্ধান্তে পৌছানো সম্ভব না।
বিজ্ঞান হল প্রাকৃতিক জগৎ সম্পর্কে জ্ঞান অর্জনের একটি উপায়। প্রাকৃতিক জগৎ সম্পর্কে জাগতিক(ন্যাচারাল) ব্যাখ্যা প্রদানে এটি সীমাবদ্ধ। অতিপ্রাকৃত কিছু আছে কি না, সে বিষয়ে বিজ্ঞান কিছুই বলতে পারে না। স্রষ্টা আছেন নাকি নেই- এ প্রশ্নের ব্যাপারে বিজ্ঞান নিরপেক্ষ। [National Academies of Sciences, Engineering, and Medicine (1998), Teaching About Evolution and the Nature of Science. pg 58 Washington, DC: The National Academies Press.]  

স্রষ্টা প্রমাণের বিষয়ে বিজ্ঞানের মত হচ্ছে, বিজ্ঞান দ্বারা স্রষ্টা প্রমাণ করা প্রায় অসম্ভব। সাইন্টিফিক আমেরিকান বলছে -  

যদি মহাবিশ্বের স্রষ্টা অতিপ্রাকৃত হয়, সময়, স্থান এবং ল' সমুহের উর্ধ্বে অবস্থান করে তবে সংজ্ঞানুসারে প্রাকৃতিক বিজ্ঞান কোনো প্রাকৃতিক ইন্সট্রুমেন্ট দ্বারা স্রষ্টাকে খুজে পেত সক্ষম হবে না। সংজ্ঞানুসারে বিজ্ঞানের কাছে স্রষ্টা একটি অমীমাংসিত রহস্য।[Michael Shermer (2018), Will Science Ever Solve the Mysteries of Consciousness, Free Will and God?, Scientific American, https://www.scientificamerican.com/article/will-science-ever-solve-the-mysteries-of-consciousness-free-will-and-god/  This article was originally published with the title "The Final Mysterians" in Scientific American 319, 1, 73 (July 2018)  doi:10.1038/scientificamerican0718-73]

ইসলাম ও কমনসেন্স কি বলে

এই বিষয়ে আরো সব রেফারেন্স সহ কোরআন ও হাদিস থেকে এবং আরো কিছু যুক্তি ও কমসেন্সে এর আলোকে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। পড়তে চাইলে ভিজিট করান -‘আল্লাহকে দেখা যায় না কেন?’ - ফ্রম মুসলিমস 

Ashraful Nafiz

I am an ordinary Muslim student who is interested in acquiring the beneficial knowledge given by Allah and hopes to spread that knowledge among the people. facebook youtube twitter instagram quora

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Would you tell me something

নবীনতর পূর্বতন