অমুসলিমদের দাওয়াহ দেওয়ার প্রকৃত পদ্ধতি

অনেক ভাইদেরকে দেখছি অমুসলিমদের উপাস্যদেরকে নিয়ে বাজে মন্তব্য করছে, অশ্লীল চিত্র দিয়ে মিম বানাচ্ছে, তাদের উপাস্যের অশ্লিল চিত্র প্রচার করছে, নিজের মন মত বিভিন্ন উলটা পাল্টা মিম বানাচ্ছে যার সাথে হিন্দু ধর্মের কোন বাস্তবতা নেই বা তার মধ্যে হিন্দুধর্ম সম্পর্কে প্রকৃত তথ্যসমৃদ্ধ কিছু নেই, এছাড়া গালমন্দ, খারাপ কথা, আপত্তিকর ছবি তৈরি করছে, এমনকি অনেকে ইচ্ছাকৃত ভুল তথ্য দিচ্ছে অমুসলিমদের ও তাদের ধর্মের নামে।

বেশির ভাগ মানুষ এসব করছে ফেক আউডি খুলে, বিভিন্ন গ্রুপে, বিভিন্ন স্যোশাল প্ল্যাটফর্মে। কিছু অরিজিনাল আইডি থেকেও এসব দেখা যাচ্ছে। মুসলিমদের অনেক ওয়েব সাইটেও এসব করা হচ্ছে।

হায় আফসোস! তারা কি একবারও চিন্তা করছেন না যে তারা করছেটা কি! আল্লাহর ভয় বলতে কি কিছু আছে তাদের অন্তরে! কোরআনে আল্লাহ স্পষ্ট বলেছেন -

وَ لَا تَسُبُّوا الَّذِیۡنَ یَدۡعُوۡنَ مِنۡ دُوۡنِ اللّٰهِ فَیَسُبُّوا اللّٰهَ عَدۡوًۢا بِغَیۡرِ عِلۡمٍ

আর তোমরা তাদেরকে গালমন্দ করো না, আল্লাহ ছাড়া যাদেরকে তারা ডাকে, ফলে তারা গালমন্দ করবে আল্লাহকে, শত্রুতা পোষণ করে অজ্ঞতাবশত। [সূরা আল আন'আম আয়াত ১০৮]

এই আয়াতের তাফসিরে তাফসিরে তাবারিতে ১৩৭৩৮- ১৩৭৪৬ পর্যন্ত হাদিস বর্ণিত রয়েছে যেগুলো হল অমুসলিমদের উপাস্যকে গালমন্দ না করা ও অপমান না করা কেন্দ্রিক। এই আয়াতের তাফসিরে কুরতুবিতে বলা হয়েছে, অমুসলিমদের উপাস্যকে গালি দেওয়া, অপমান করা হারাম করার আরো একটা কারণ হতে পারে যে এমন করলে কাফেররা মুখ ফিরিয়ে নেবে এবং তাদের অবিশ্বাস বৃদ্ধি পাবে।

তাফসিরে আর রাজিতেত অমুসলিমদের উপাস্যকে গালি দেওয়ার অনেকগুলো অপকারিতা সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। এ বিষয়ে আরো বিস্তারিত জানতে চাইলে এখানে পেয়ে যাবেন এই আয়াতের বেশ কয়েকটা তাফসির [ https://tafsir.app/6/108 ]

কোরআনে আল্লাহ মুশরিকদের উপাস্যকে গালি দিতে বারণ করেছেন আর মহানবী ﷺ হাদিসে কাফেরদেরকে গালি দিতে বারণ করেছেন। নিশ্চয়ই এর পিছনে কোন হিকমাহ লুকায়িত রয়েছে যার কারনে আল্লাহ ও তার রাসূল আমাদেরকে নিষেধ করেছেন! সেই হিকমাহ ও কারনটা বুঝার চেষ্টা করুন, উপলব্ধি করা, জানার, বের করার করুন। 

عَنْ سَعِيدِ بْنِ زَيْدٍ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ لاَ تُؤْذُوا مُسْلِمًا بِشَتْمِ كَافِرٍ

সাঈদ বিন যায়দ (রা) বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, তোমরা কাফেরকে গালি দিয়ে মুসলিমকে কষ্ট দিয়ো না। [হাদ্সি সম্ভার ২০৯৩; বাইহাক্বী ৭৪৩৯, হাকেম ১৪২০, সহীহুল জামে’ ৭১৯১]

দ্বীনের পক্ষে দাওয়াত দেওয়া, হকের পথে দাওয়াত দেওয়া আল্লাহর নিকট অনেক প্রিয় কাজ। আল্লাহ তাদের উদ্দেশ্য করে বলেন, 

 وَ مَنۡ اَحۡسَنُ قَوۡلًا مِّمَّنۡ دَعَاۤ اِلَی اللّٰهِ وَ عَمِلَ صَالِحًا وَّ قَالَ اِنَّنِیۡ مِنَ الۡمُسۡلِمِیۡنَ 

আর তার চেয়ে কার কথা উত্তম, যে আল্লাহর দিকে দাওয়াত দেয়, সৎকর্ম করে এবং বলে, অবশ্যই আমি মুসলিমদের অন্তর্ভুক্ত’? [সূরা ফুসসিলাত, আয়াত ৩৩]

 وَلۡتَکُنۡ مِّنۡکُمۡ اُمَّۃٌ یَّدۡعُوۡنَ اِلَی الۡخَیۡرِ وَ یَاۡمُرُوۡنَ بِالۡمَعۡرُوۡفِ وَ یَنۡهَوۡنَ عَنِ الۡمُنۡکَرِ ؕ وَ اُولٰٓئِکَ هُمُ الۡمُفۡلِحُوۡنَ

আর যেন তোমাদের মধ্য থেকে এমন একটি দল হয়, যারা কল্যাণের প্রতি আহ্বান করবে, ভাল কাজের আদেশ দেবে এবং মন্দ কাজ থেকে নিষেধ করবে। আর তারাই সফলকাম। [সূরা আলে ইমরান আয়াত ১০৪]

কিন্তু আগে নিজে সেইগুলো করতে হবে যেগুলো সম্পর্কে অন্যকে উপদেশ দিচ্ছ। আল্লাহ বলেন,

 یٰۤاَیُّهَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا لِمَ تَقُوۡلُوۡنَ مَا لَا تَفۡعَلُوۡنَ کَبُرَ مَقۡتًا عِنۡدَ اللّٰهِ اَنۡ تَقُوۡلُوۡا مَا لَا تَفۡعَلُوۡنَ 

হে ঈমানদারগণ, তোমরা তা কেন বল, যা তোমরা কর না? তোমরা যা কর না, তা বলা আল্লাহর নিকট বড়ই ক্রোধের বিষয়। [সূরা আস সফ আয়াত ২-৩] 

হাদিসে এসেছে যারা অন্যকে উপদেশ দিত কিন্তু নিজের জীবনে সেগুলো বাস্তবায়ন করতো না তাদের ভয়াভহ আজাব অপেক্ষা করছে আখিরাতে। [আত-তারগীব ওয়াত তারহীব ২৩২৭; সিলসিলা সহীহাহ ২৯১; মিশকাত ৫১৩৯]

যাইহোক কিন্তু দাওয়াত দেওয়ার একটা পদ্ধতি রয়েছে। আলোচনা-সমালোচনা, অভিযোগ করতেই পারেন তাদের ধর্ম নিয়ে, বা তাদের ধর্মের ভুল বিষয়গুলো, ভুল রীতিনীতি গুলো, অসারতা, অমানবিকতা, অশ্লিলতা, নীতি-নৈতিকতা বিরোধী আদেশ, বৈপরীত্য, বিকৃতি ইত্যাদি বিষয়গুলো তুলে ধরতেই পারেন, কিন্তু সেটা হতে হবে আক্রমণাত্মক না হয়ে, সততার সাথে নিরপেক্ষ ভাবে, দলিল নির্ভর, গঠনমূলক, শালীনতা ও আখলাক বজায় রেখে, মিথ্যাচার ও ধোঁকা-প্রতারণাবিহীন। কারন এই পদ্ধতির বিপরীত ভাবে কিছু করা মুমিনের চরিত্রের সাথে যায় না, নাহি এসব আল্লাহ ‍ও তার রাসূলের আদেশ-নিষেধ অনুসারে গ্রহনযোগ্য। যাইহোক এতে হবে কি আসলে তা হল তারা নিজেদের ধর্ম নিয়ে চিন্তা করতে বাধ্য হয়ে যাবে, কিন্তু যখন আপনি আক্রমণাত্মক, ব্যাঙ্গাত্মক, ক্রিটিসাইজ করে, অপমান, মিথ্যাচার করে কিছু করবেন তখন তারা সেটাতে তেমন গুরুত্বই দিবে না, যেটা আগের পদ্ধতি ব্যবহার করলে দিত। এখনতো অনেক ডিবেট দেখা যায়, ডিবেটে যদি কাফেরদের সাথে ইসলামে বলা স্টাইলে বিতর্ক করে কেউ, তাহলে সেই লোক মুসলিম হোক বা না হোক কিন্তু তার অনুসারিদের অনেকের উপর এটার প্রভাব পড়বে, তারা নতুন করে চিন্তা করতে বাধ্য হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ। কোরআনে আল্লাহ বলেন,

اُدۡعُ اِلٰی سَبِیۡلِ رَبِّکَ بِالۡحِکۡمَۃِ وَ الۡمَوۡعِظَۃِ الۡحَسَنَۃِ وَ جَادِلۡهُمۡ بِالَّتِیۡ هِیَ اَحۡسَنُ ؕ اِنَّ رَبَّکَ هُوَ اَعۡلَمُ بِمَنۡ ضَلَّ عَنۡ سَبِیۡلِهٖ وَ هُوَ اَعۡلَمُ بِالۡمُهۡتَدِیۡنَ

তুমি তোমরা রবের পথে হিকমত ও সুন্দর উপদেশের মাধ্যমে আহ্বান কর এবং সুন্দরতম পন্থায় তাদের সাথে বিতর্ক কর। নিশ্চয় একমাত্র তোমার রবই জানেন কে তার পথ থেকে ভ্রষ্ট হয়েছে এবং হিদায়াত প্রাপ্তদের তিনি খুব ভাল করেই জানেন। [সূরা আন-নাহাল আয়াত ১২৫]

وَ لَا تُجَادِلُوۡۤا اَهۡلَ الۡکِتٰبِ اِلَّا بِالَّتِیۡ هِیَ اَحۡسَنُ ٭ۖ اِلَّا الَّذِیۡنَ ظَلَمُوۡا مِنۡهُمۡ وَ قُوۡلُوۡۤا اٰمَنَّا بِالَّذِیۡۤ اُنۡزِلَ اِلَیۡنَا وَ اُنۡزِلَ اِلَیۡکُمۡ وَ اِلٰـهُنَا وَ اِلٰـهُکُمۡ وَاحِدٌ وَّ نَحۡنُ لَهٗ مُسۡلِمُوۡنَ

আর তোমরা উত্তম পন্থা ছাড়া আহলে কিতাবদের সাথে বিতর্ক করো না। তবে তাদের মধ্যে ওরা ছাড়া, যারা জুলম করেছে। আর তোমরা বল, ‘আমরা ইমান এনেছি আমাদের প্রতি যা নাজিল করা হয়েছে এবং তোমাদের প্রতি যা নাজিল করা হয়েছে তার প্রতি এবং আমাদের ইলাহ ও তোমাদের ইলাহ তো একই। আর আমরা তাঁরই সমীপে আত্মসমর্পণকারী’। [সূরা আনকাবুত আয়াত ৪৬]

আবার কিছু উদার ও দরদি ভাই রয়েছে যারা এগুলোরও বিরোধীতা করে। কারন এসব করলে কাফেররা নবীকে গালি দেয়, আল্লাহকে গালি দেয়, ইসলামকে গালি দেয় ইত্যাদি, তারা বলে ইসলাম নাকি এসব সমর্থন করে না। এদের উদারতা ও অসাম্প্রদায়িক চিন্তা চেতনা দেখলে হাসি পায়। তারা নিজেদের আকল আসলেই কবর দিয়ে রাখছে। এই দিকে কাফেরের দল দলে দলে মুসলিমদেরকে কাফের বানানোর কাজ করতেছে, ইসলাম বিদ্বেষ ছড়াচ্ছে, অপপ্রচার, মিথ্যাচার, প্রোপাগান্ডা ইত্যাদি করছে, এমনকি রিভার্স লাভ জিহাদের নামে জ্ঞানহীন ও মুর্খতাপূর্ণ পশু জাতীয় কার্যক্রম চালাচ্ছে। আর এরা আসে এসব বুদ্ধের বাণী শুনাতে। আল্লাহ আমাদেরকে তাদের উপাশ্যকে গালি দিতে নিষেধ করেছেন। তাদের ধর্ম যে বিকৃত সেটা প্রমান করতে নিষেধ করেন নি। তাই এসব বুদ্ধের বাণী দিয়ে লাভ নেই কারন বুদ্ধের বাণী দিয়ে দুনিয়া ও ইসলাম দুটোই চলে না। 

তারা আমরা কিছু করলেও গালি দেয়, আমরা কিছু না করলেও গালি দেয়। কেউ মুসলিম হলেও গালি দেয়, অমুসলিম কেউ ইসলামের পক্ষে বললেও গালি দেয়, ইসলামের দাওয়াত দিলেও গালি দেয়, দ্বীন পালন করতে চাইলেও গালি দেয়, আল্লাহর আইন বাস্তবায়নের কথা বললেও গালি দেয়। মুসলিমরা যেটাই করুর না কেন গালিতো কাফেররা দিবেই দিবে। আমরা কিছু করি বা না করি তারা ঠিকই ইসলামের বিরুদ্ধে সব ধরনের কাজ করছে। এখন এসব বিশেষ ব্রেন জাতীয় মুসলিমের যুক্তি অনুসারে দাওয়াহ, অন্যায়ের প্রতিবাদ, ইসলামের পক্ষে কথা বলা, দ্বীন পালন করা, দ্বীনের কথা বলা, আল্লাহর আইন বাস্তবায়নের কথা বলা, চেষ্টা করা ইত্যাদি এই সব কিছুই বন্ধ করে দিতে হবে, তাই না! তারা কি এটাই বোঝাতে চায় যে এসব বন্ধ করে আমরা শুধু দর্শকের মত কাফেরদের কার্যক্রমগুলো দেখি!?

যাইহোক মূল বিষয়ে ফিরে আসা যাক, অমুসলিমদের দাওয়াত দেওয়ার পদ্ধতি হচ্ছে নম্র ভাবে, সুন্দর ভাবে, ঠান্ডা মাথায়। এই বিষয়ে আল্লাহ তায়ালা বলেন, 

 فَبِمَا رَحۡمَۃٍ مِّنَ اللّٰهِ لِنۡتَ لَهُمۡ ۚ وَ لَوۡ کُنۡتَ فَظًّا غَلِیۡظَ الۡقَلۡبِ لَانۡفَضُّوۡا مِنۡ

অতঃপর আল্লাহর পক্ষ থেকে রহমতের কারণে তুমি তাদের জন্য নম্র হয়েছিলে। আর যদি তুমি কঠোর স্বভাবের, কঠিন হৃদয়সম্পন্ন হতে, তবে তারা তোমার আশপাশ থেকে সরে পড়ত। [সূরা আলে ইমরান আয়াত ১৫৯]  

اِذۡهَبَاۤ اِلٰی فِرۡعَوۡنَ اِنَّهٗ طَغٰی فَقُوۡلَا لَهٗ قَوۡلًا لَّیِّنًا لَّعَلَّهٗ یَتَذَکَّرُ اَوۡ یَخۡشٰی

তোমরা দু’জন ফেরাউনের নিকট যাও, বস্তুতঃ সে সীমালঙ্ঘন করেছে। তার সঙ্গে তোমরা নম্রভাবে কথা বলবে, হয়তো সে উপদেশ গ্রহণ করবে কিংবা (আল্লাহর) ভয় করবে। [সূরা ত্বহা আয়াত ৪৩-৪৪]

আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা আমাদেরকে আদেশ করেছেন, উৎকৃষ্ট পদ্ধতিতে প্রতিরোধ করতে বলেছেন, বিরোধিতা করতে বলেছেন।

وَ لَا تَسۡتَوِی الۡحَسَنَۃُ وَ لَا السَّیِّئَۃُ ؕ اِدۡفَعۡ بِالَّتِیۡ هِیَ اَحۡسَنُ فَاِذَا الَّذِیۡ بَیۡنَکَ وَ بَیۡنَهٗ عَدَاوَۃٌ کَاَنَّهٗ وَلِیٌّ حَمِیۡمٌ

আর ভাল ও মন্দ সমান হতে পারে না। মন্দকে প্রতিহত কর তা দ্বারা যা উৎকৃষ্টতর, ফলে তোমার ও যার মধ্যে শত্রুতা রয়েছে সে যেন হয়ে যাবে তোমার অন্তরঙ্গ বন্ধু। [সূরা ফুসসিলাত আয়াত ৩৪]

 اِدۡفَعۡ بِالَّتِیۡ هِیَ اَحۡسَنُ السَّیِّئَۃَ ؕ نَحۡنُ اَعۡلَمُ بِمَا یَصِفُوۡنَ

যা উত্তম তা দিয়ে মন্দ প্রতিহত কর; তারা যা বলে আমি তা সম্পর্কে অধিক জ্ঞানী। [সূরা আল-মুমিনুন আয়াত ৯৬]

সূরা আনকাবুত আয়াত ৪৬ তে আল্লাহ জালিমদেরকে ছাড়া বাকিদেরকে উত্তম ও উৎকৃষ্ট পদ্ধতিতে দাওয়াত দিতে বলেছেন। তেমনই তিনি মুর্খদেরকেও এড়িয়ে চলতে বলেছেন, কিন্তু আজকালতো দেখা যায় কিছু মুর্খদের সাথে তর্ক-বিতর্ক করে মুসলিমরা সময় নষ্ট করে, যার মধ্যে কোন কল্যাণ নিহিত নেই তারপরও, কোন ফায়দা ছাড়া এমনটা করা উচিত নয়।

 خُذِ الۡعَفۡوَ وَ اۡمُرۡ بِالۡعُرۡفِ وَ اَعۡرِضۡ عَنِ الۡجٰهِلِیۡنَ  وَ اِمَّا یَنۡزَغَنَّکَ مِنَ الشَّیۡطٰنِ نَزۡغٌ فَاسۡتَعِذۡ بِاللّٰهِ ؕ اِنَّهٗ سَمِیۡعٌ عَلِیۡمٌ

তুমি বিনয় ও ক্ষমা পরায়ণতার নীতি গ্রহণ কর, এবং লোকদেরকে সৎ কাজের নির্দেশ দাও, আর মূর্খদেরকে এড়িয়ে চল। আর যদি শয়তানের পক্ষ হতে কোন প্ররোচনা তোমাকে প্ররোচিত করে, তবে তুমি আল্লাহর আশ্রয় চাও। নিশ্চয় তিনি সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ। [সূরা আরাফ আয়াত ১৯৯-২০০]

এছাড়া কোন মুমিনের ভাষা, কথার ধরন, আচার আচরণ, চরিত্র, আখলাক কখনো খারাপ হতে পারেনা। কারণ ইসলামে গালাগালি স্পষ্ট হারাম - https://islamicknowledge80.blogspot.com/2021/06/blog-post_8.html

সর্বশেষ কথা, ইল্‌ম ছাড়া দাওয়াতি কাজ করার যোগ্যতা নেই কারো, আগে প্রকৃত ইল্‌ম অর্জন প্রয়োজন, আখলাক শিখা প্রয়োজন। আগে নিজে জানা প্রয়োজন, কারণ নিজে প্রকৃত বিষয় না জানলে অন্যকে জানানো সম্ভব না, ইসলামে জেনে বুঝে দাওয়াতি কাজ করতে বলা হয়েছে। তাই বিতর্ক করার সময় প্রকৃত বিষয় জেনে, সবচেয়ে শক্তিশালী দলিল প্রমান সাথে নিয়ে বিতর্ক করতে হবে। 

 قُلۡ هٰذِهٖ سَبِیۡلِیۡۤ اَدۡعُوۡۤا اِلَی اللّٰهِ ۟ؔ عَلٰی بَصِیۡرَۃٍ اَنَا وَ مَنِ اتَّبَعَنِیۡ ؕ وَ سُبۡحٰنَ اللّٰهِ وَ مَاۤ اَنَا مِنَ الۡمُشۡرِکِیۡنَ

বল, ‘এটা আমার পথ। আমি জেনে-বুঝে আল্লাহর দিকে দাওয়াত দেই এবং যারা আমার অনুসরণ করেছে তারাও। আর আল্লাহ পবিত্র মহান এবং আমি মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত নই’। [সূরা ইউসুফ আয়াত ১০৮] 

ইবনে তাইমিয়্যা (রহ) দাওয়াহ দেওয়া, বিতর্ক করা নিয়ে বলেন, ইসলামে ফ্যালাশিয়াস আর্গুমেন্ট ব্যবহার করা মিথ্যা কথা বলার মতোই হারাম। ফ্যালাশাস আর্গুমেন্ট আর জঘন্য মিথ্যাচার দুটোই এক। এটি প্রমাণ করতে ইবনে তাইমিয়্যা কুরআনের একাধিক আয়াত সাইট করেন, যেমন আল্লাহ বলেন, "তাদের নিকট হতে কি কিতাবের প্রতিশ্রুতি নেয়া হয়নি যে, আল্লাহর নামে সত্য ছাড়া কিছুই বলবেনা?"( ৭:১৬৯) তিনি আরও বলেন, আর্গুমেন্ট প্রোভাইড করার আগে যিনি প্রোভাইড করবেন তাকে অবশ্যই তা সম্পর্কে ভালোভাবে জানতে হবে। আর্গুমেন্ট ভ্যালিড কিনা সেটা বোঝার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। যে ব্যক্তির কোনো এক আর্গুমেন্ট নিজে ঠিকমতো বুঝতে পারেনা তার জন্য সেটা ব্যবহার করা জায়েজ নেই। যেমন আল্লাহ বলেন, "যে বিষয়ে তোমার কোন জ্ঞান নেই সেই বিষয়ে অনুমান দ্বারা পরিচালিত হয়োনা।"(১৭:৩৬) [A Study of Darʾ taʿāruḍ al-ʿaql wa-l-naql. Page: 174; Asief Mehedi ভাই থেকে সংগৃহিত]

আল্লাহ আমার সব দ্বীনি ভাই ও দাঈ ভাইকে সঠিকটা বুঝা ও সে অনুযায়ী আমল করার তৌফিক দান করুক

Ashraful Nafiz

I am an ordinary Muslim student who is interested in acquiring the beneficial knowledge given by Allah and hopes to spread that knowledge among the people. facebook youtube twitter instagram quora

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Would you tell me something

নবীনতর পূর্বতন