মূল লেখকঃ- Titas Rahin Tanvirr
বিজ্ঞান ও নাস্তিকতা। নাস্তিক্যবাদ এবং বিবর্তনবাদের--"হঠ্যাৎ তত্ব বা By chance theory"-- একটা বিজ্ঞান ফোবিয়া নয় কী !? বিজ্ঞানে অন্ধবিশ্বাস নিয়ে ছোট আলোচনা।
প্রথম কথা টাইম ট্রাবেল, টাইম ডাইলেশন, ডার্ক এনার্জি, মাল্টিভার্স, প্যারালাল
ইউনিভার্স, ডার্ক ম্যাটার, ওয়ার্ম হোল ইত্যাদি পরিক্ষিত ভাবে প্রমানিত নয় তারপরও নাস্তিকরা এসব বিশ্বাস করে
হঠাৎ করেই শূণ্য থেকেই পদার্থের সৃষ্টি ও এমনিতেই বিগব্যাং-বা মহা বিস্ফোরণ হয়ে মহাবিশ্বে সৃষ্টি হয়ে গেলো... এভাবেই হঠাৎ করেই সব কিছু অনস্তিত্ত্ব থেকে অস্তিত্ত্বে চলে আসলো।
এভাবেই হঠ্যাৎ করে সৃষ্টির মধ্যে বিবর্তন এবং বৈজ্ঞানিক কর্মকান্ড কোথা থেকে উড়ে এসে জুড়ে বসে তাদের কাজ শুরু করে দিল...
হঠাৎ করেই এভাবে মহাবিশ্বে কোটি কোটি গ্যালাক্সি, প্রজ্জ্বলিত আলোযুক্ত নক্ষত্র, সৌরজগৎ, গ্রহ, উপগ্রহ, ব্ল্যাক হোল, নেবুলা ইত্যাদি সৃষ্টি হয়ে গেল...
এই মহাসৃষ্টির মধ্যে হঠ্যাৎ করেই সেসবের মধ্যে এমনভাবে বিজ্ঞান ঢুকে গেল যে, যার ফলে- অপরাপর বিভিন্ন পদার্থ এবং অপদার্থ সৃষ্টি হয়ে গেল... হঠাৎ করেই সৃষ্ট পদার্থগুলো নিজ নিজ দায়িত্বে বিবর্তন হওয়া শুরু করে দিল...
হঠাৎ করেই প্রত্যকের নিজ নিজ কক্ষপথ চলে আসলো, গ্রাভিটি তৈরী করে নিজ সীমারেখায় স্পিন করে এবং তারা তাদের বড় দাদাকে কেন্দ্র করে ঘুরা শুরু করে দিল...
হঠাৎ করেই পৃথিবীতে সেইসব জড় পদার্থ মিলেমিশে তারা নিজেরাই RNA, DNA, কোষ ইত্যাদি ক্রম স্বয়ংক্রিয়ভাবে যথাক্রমে সৃষ্টি হওয়া শুরু করে দিল... হঠাৎ করে তাহাসব বৈজ্ঞানিকভাবে হিসাবনিকাশ করে পৃথিবীতে এককোষী প্রাণীতে উৎপত্তি হওয়া শুরু করে দিলো...
হঠাৎ করেই এককোষী প্রাণীরা নিজেই নিজের মধ্যে চ্যাৎনা সৃষ্টি করে দিল... হঠাৎ করেই তাদের মধ্যে অর্জিত সেই চ্যাৎনা থেকেই বহুকোষী প্রাণীতে বিবর্তিত হবার খায়েশ নিজ থেকে জন্মাতে শুরু করলো...
হঠ্যাৎ করেই তারা বহুকোষী প্রাণীতে রূপান্তরিত হয়ে নিজেদের মধ্যে যৌনতার স্বাদ এবং বংশবিস্তারের লোভ দেখা দিল এবং ইচ্ছামত স্ত্রী ও পুরুষ অঙ্গ--রঙ্গে গঁজাতে লাগলো... এবং সময় অতিক্রান্ত হবার সাথে সাথে অন্যান্য বিভিন্ন অঙ্গ সংযুক্ত এবং বিলুপ্ত করার শপথ গ্রহণ করলো...
হঠাৎ করেই আলো, তাপ, মাটি, বাতাস, পানি, সাগর মহাসাগর একত্রে বৈঠক করে জীবণ উৎপত্তির মাল মশলাগুলো পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রণ করা নিজ থেকে শুরু করে দিল....
হঠাৎ দুর্ঘটনায় কাকতালীয় ভাবে নাথিং থেকে সমগ্র মহাবিশ্ব হয়ে গেছে তাও চমৎকার ভাবে, আবার দুর্ঘটনায় পৃথিবী অক্সিজেন সমৃদ্ধ হয়ে গেছে, পৃথিবীর আলো দরকার তাও প্রচন্ড তাপমুক্ত তাও দুর্ঘটনায় নির্দিষ্ট নিরাপদ দুরুত্বে সুর্য হয়ে গেল, পৃথিবীর চাঁদ দরকার তাও দুর্ঘটনায় হয়ে গেল, পৃথিবীকে গ্রহাণুর আঘাত থেকে বাচতে গ্যসীয় গ্রহ দরকার তাও দুর্ঘটনায় বৃহস্পতি হয়ে গেল এছাড়া আরো কত দূর্ঘটনা
হঠাৎ করেই তারা বিবর্তনীয় গাছ লাগিয়ে--কে কোন জাতের কী হবে এবং কোন প্রক্রিয়ায় ধাপে ধাপে কে এবং কোনটি ভবিষ্যতে কী হবে--তা পূর্বনির্ধারণ করার প্রতিযোগিতা শুরু করে দিলো। -যেমন -নক্ষত্ররা-আলো ও তাপ দিবে, পাহাড় পানির জন্য বরফ জমা রাখবে, বাতাস সমুদ্র থেকে জলীয় আহরণ করে মেঘ তৈরী পৃথিবীতে বৃষ্টি নামিয়ে জীবণকে উৎসাহিত করবে এবং বংশবিস্তারে সাহায্য করবে ইত্যাদি ইত্যাদি...
হঠ্যাৎ করেই নতুন নতুন উদ্ভিদ এবং ফল গোপনে গোপনে জন্ম নিবে পৃথিবীর মাটি থেকে। মাটির নিচে খনিজ পদার্থের জন্ম নিবে এবং প্রকৃতিতে এসব প্রকৃতির ইচ্ছামত ঘটতে শুরু করলো...
হঠ্যাৎ করে কেউ তার ইচ্ছামত একবার পানিতে, একবার মাটিতে, একবার বাতাসে, একবার নদী ও সাগর-মহাসাগরে বাস করবার বায়না ধরবে এবং তা ক্রম পরিবর্তন করতে থাকল...
হঠ্যাৎ করে গাছ থেকে মাছ-মাছ থেকে সরীসৃপ-সরীসৃপ থেকে পাখি-.......
আবার কেউ সরীসৃপ থেকে গাছে গাছে, ডালে ডালে পরিভ্রণ করার স্বপ্ন দেখাও শুরু করে দিল।
ব্যস, শুরু হয়ে গেল সবার জোর প্রতিযোগিতা...
--এভাবেই ইচ্ছেমত তারা ক্রম উন্নত প্রজাতিতে বিবর্তিত হবার টিকিট পেয়ে গেল। যারা ইচ্ছে করলো না--তারা সেখানেই রয়ে গেল-
যেমন--ঐ সমস্ত গাছ--মাছ হতে ইচ্ছে করলো না, তারা গাছই রয়ে গেল এবং যারা মাছ হতে ইচ্ছে করলো-তারা মাছ হয়ে গেলো। যারা মাছ থেকে--পাখি হতে ইচ্ছা করলো না, তারা মাছই রয়ে গেলো, যারা ইচ্ছে করলো--তারা পাখি হয়ে গেলো।
এভাবে যারা ইচ্ছে করেছে পরবর্তী ধাপে উন্নীত হবে তারা বিবর্তিত হবে তারা হয়েছে। কিন্তু যারা ইচ্ছে করিনি তারা সবাই সেখানেই রয়ে গেছে। এসব বিবর্তিত আইন সৃষ্টির প্রতিটি ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য।
মহাবিশ্ব যেমন জটিল থেকে জটিলতর ও উন্নত হয়েছে, তেমনি মানুষের মস্তিষ্কও জটিল থেকে জটিলতর ও উন্নত হয়েছে এবং এসবের রহস্য ক্রমেই ঘনীভূত হয়েছে এবং হচ্ছে।
এসব হলো মিলিয়ন মিলিয়ন, বিলিয়ন বিলিয়ন বছরের কারসাজি বৈ কিছু নয় যা, হঠ্যাৎ তত্বের একটা মারাত্মক বিস্ময়কর খেলা।
স্রেফ "শুন্য" থেকেই আমাদের এই আশ্চর্যরকম সুন্দর মহাবিশ্বের উৎপত্তি হয়েছে। কিন্তু তা কী করে সম্ভব? বাহ্যিক শক্তি ছাড়া এখন নতুন কিছু সৃষ্টি হয় না তাহলে অতিতে কিভাবে সৃষ্টি হল? আপনা আপনি মহা বিস্ফোরণের পরে সব কিছু নির্দিষ্ট কক্ষ পথে আসলো কিভাবে?
কোন নাস্তিক চিন্তা করেনা এগুলা। কেন চিন্তা করেনা একমাত্র তারাই যানে।
বানরের বা অন্য কোন প্রাইমেট প্রাণী থেকে ক্রমবিবর্তনের সর্বশেষ ফলাফলের পরিণতি এই মানব প্রজাতি যারা কথা বলতে পারে, চিন্তা করতে পারে, জ্ঞান গবেষণা করে বিশ্বকে জয় করতে পারে এমন প্রজাতির স্বপ্ন কোন উন্নত নতুন প্রজাতিতে রূপান্তরিত হবার স্বপ্ন দেখা উচিৎ।
কিন্তু প্রশ্ন থেকেই যায় তাহলো, ভবিষ্যতে মানবসভ্যতার পরিণতিটা কী হবে___!?!?
অন্যদিকে, বিবর্তনের বিপরীত অবস্থা এই যে, বিবর্তনবাদে বিশ্বাসীরা ক্রম উন্নত চিন্তা না করে, বরং তারা মানুষের অধস্তন অর্থ্যাৎ নিম্নস্তরের পশুপাখিদের সংস্কৃতি কে অনুস্মরণ করার অপচেষ্টা করে কেন__??
এখানেই ঠিক তাদের বৈজ্ঞানিক বিধিটা মিলাতে পারিনা।
মাছ-যেমন গাছকে অনুস্মরণ করেনা-
তেমন, পাখি-মাছকে, সরীসৃপ-পাখিকে ইত্যাদি।
অথচ উন্নত জীব--তার অধস্তন প্রজাতিকে অনুস্মরণ করার জন্য এই অত্যাধুনিক যুগে বসেও নাস্তিক/বিবর্তনবাদীরা লড়াই করে চলেছে--যা বিবর্তনবাদ আইনের বিপক্ষেই যায়।
বিষয়টা উন্নততর প্রজাতির ক্ষেত্রে এটা একটা বিপরীতমুখী অবস্থাও বটে !
স্রষ্টা ছাঁড়া সৃষ্টিকে যেমন বুঝিনা - তেমনভাবে, স্রষ্টাহীন বিবর্তনের লীলাখেলাটাও বিবর্তনবাদীরা নিজেও বোঝেনা, অন্যকেও বুঝাতে পারেনা। বিজ্ঞানের দোহায় দিয়ে বিবর্তনীয় তত্বধারা কতদিন টিকিয়ে রাখবে বিলিয়ন বছরের বিবর্তনের আঁজগূবি ভুল ভাল গল্প এবং কল্পকাহিনী দিয়ে এবং লেপের আঁড়ালে উঞ্চ গরমে মুরগীর মত ডিমে তাওয়া দিয়ে ?????
আপনি বিশ্বাস করবেন না যে আমরা কেবল 4% তথ্য সংগ্রহ করতে পেরেছি পৃথিবীর ভিতর ও বাহিরের সব কিছু মিলিয়ে। এই সামান্য তথ্য দিয়ে সৃষ্টিকর্তাকে জায করা কতুটুকু বৈজ্ঞান সম্মত ?????
বিবর্তনবাদী নাস্তিকরা স্রষ্টায় বিশ্বাস রাখা মানুষদের বলে তারা নাকি অন্ধবিশ্বাসী। কিন্তু এই নাস্তিরা নিজেরাই এটা বুজে না যে তারা যেটাকে বিশ্বাস করে সেটাও অন্ধবিশ্বাস ছাড়া কিছুই নয়।
বিজ্ঞান দিয়ে তারা এটা প্রমান করার চেষ্টা করে যে সব কিছু সৃষ্টিকর্তা ছাড়া সৃষ্টি হয়েছে। তারা সৃষ্টিকর্তাকে বিশ্বাস করতে চায় না কিন্তু হঠাৎ সব কিছু আপনা আপনি শূণ্য থেকে সৃষ্টি হওয়াকে ঠিকই বিশ্বাস করে। তাদের এই হঠাৎ থিউরী আসলেই কি অবৈজ্ঞানীক নয় ?????