শরিয়াহ আইনে চোরের হাত কাটার বিধান সম্পর্কিত সকল তথ্য

কিছু কিছু মানুষের কাছে ইসলামে চোরের শাস্তি বর্বর মনে হয় কিন্তু মানুষের বানানো কোন আইনই বর্বর মনে হয় না! বিষয়টা আসলেই ভন্ডামি ছাড়া কিছু না। যাই হোক চোরের হাত কাটা নিয়েও রয়েছে অনেক শর্ত, সব ধরনের চোরের হাত কাটা যায় না ইসলামে, যাদের হাত কাটা যায় তারা যদি নির্দিষ্ট পরিমানের মূল্যের ও সংরক্ষিত স্থান থেকে ও বাহিরের কেউ কিছু চুরি করলেই চোরের হাত কাটা যাবে, না হয় চোরের হাত কাটা যায় না।

যদি প্রকৃত শরিয়া আইন বাস্তবায়ন করা হয় তাহলেত সঠিক ভাবে যাকাত দেওয়াও বাধ্যতা মূলক হয়ে যাবে। সবার খাদ্যনিশ্চিত করা সরকারের উপর দায়িত্ব এসে যাবে। (এখানে বেকার বসিয়ে খাওয়ানোর কথা বলছি না বরং জনশক্তিকে সঠিক ভাবে ব্যবহার করে, বেকারদেরকে কাজ দিয়ে তাদেরকে সচ্ছল করার কথা বলছি)। 

তখন দেখা যাবে দারিদ্রতার হার অনেকটা কমে যাবে। তখন যদি আইনের মাধ্যমে চোরের চুরির কারনে হাত কাটা হয় তাহলেত তা কখনো অন্যায় বা নিষ্ঠুর বা অমানবিক বা বর্বর হতেই পারে না। কারন কারো চুরি করে নিজের জীবিকা নির্বাহ করার প্রয়োজন হয় না, তখনত সে যাববে যে যদি সে চুরি করে তাহলে তার হাত কাটা হবে, কিন্তু তারপরও যদি সে চুরি করে তাহলেত সেটা আইনের দোষ না।

Table of Contents

{tocify} $title={Table of Contents}

শরিয়া আইনে কাকে ও কখন চুরির জন্য শাস্তি দেওয়া হবে ও কাকে দেওয়া হবে না?

আল্লাহ কোরআনে বলেছেন, “আর পুরুষ চোর ও নারী চোর, তাদের উভয়ের হাত কেটে দাও; তাদের কৃতকর্মের ফল ও আল্লাহর পক্ষ থেকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হিসেবে। আর আল্লাহ পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।” [সুরা মায়েদা, আয়াত ৩৮]

চুরি যেই করুক ধনী বা গরিব, শাসক বা প্রজা সবার জন্য শাস্তি হল চুরির শাস্তি হাত কাঁটা [আল-বুখারী, আহাদীস আল-আম্বিয়া, ৩২১৬; বুখারী ৩৪৭৫, ৬৭৮৮, মুসলিম ৪৫০৫-৪৫০৭]

কেউ কারোর কাছ থেকে কোন কিছু ধার নিয়ে তা অস্বীকার করলে এবং তা তার অভ্যাসে পরিণত হলে এমনকি বস্ত্তটি হাত কাটার সমপরিমাণ হলে তার হাত খানা কেটে দেয়া হবে। [মুসলিম ১৬৮৮; আবূ দাউদ ৪৩৭৪, ৪৩৯৫, ৪৩৯৬, ৪৩৯৭]

কিন্তু চুরির শাস্তি হাত কাটা হলেও ইসলামে কোন নাবাল ও নাবালিকা এবং পাগলকে কোন অপরাদের জন্য শাস্তি দেওয়ার বিধান নেই। [ইবন মাজাহ ২৫৪১; মিশকাত ৩২৮৭-৩২৮৮; সুনানে আবু দাউদ ৪৩৯৮-৪৪০৬, ৪৩৪৬-৫১; তিরমিজি ৪৩৫১; আহমাদ ২৪১৭৩, ২৪১৮২, ২৪৫৯০, দারেমী ২২৯৬, ইরওয়াহ ২৯৭; বায়হাকী ফিস সুনান ৭/২৩৯, আল-হাকিম ফিল মুসতাদরাক ৪/৩৬৫]

এগুলা ছাড়াও আমানত আত্মসাৎকারী, লুটেরা এবং ছিনতাইকারী, প্রতারকের হাত কাটা হয় না। ফল গাছ থেকে ফল ছিঁড়ে খেলে, খেজুর গাছের শাঁস, খেজুর গাছের মাথি-মজ্জা খেলে, খুদার তাড়নায় চুরি করলে এই ধরনের ব্যাক্তিদের হাত কাটা হবে না। [তিরমিযী ১৪৪৮, ১৪৪৯; ইব্নু মাজাহ্ ২৫৯১, ২৫৯৩, ২৬৪০, আবূ দাউদ ৪৩৮৮, ৪৩৯০, ৩৩৯২; সুনানে নাসাই ৪৯৬০, ৪৯৬৯, ৪৯৭৮;  ইব্নু হিববান ১৫০৫; ইবনে কাইয়্যিম আল-জাওযিয়া, ইলামুল-মুওয়াক্কিইন, ৩/১০-১২; মুহাম্মদ রওয়াস কালাজী, মেভসুআতু ফিকহি উমর ইবনুল খাত্তাব, পৃ. ৩৮২; আবু দাউদ, জিহাদ, ৮৫; ইবনে মাজাহ, তিজারাত, ৬৭]

সফরে হাত কাটা যাবে না। [সহীহ আত-তিরমিযী ১৪৯০; মিশকাত ৩৬০১; আবু দাউদ ৪৪০৮; নাসায়ী ৪৯৭৯; দারিমী ২৫৩৪; সহীহ আল জামি‘ ৭৩৯৭; মিশকাতুল মাসাবিহ ৩৬০১]

ব্যাক্তিগত ক্রিতদাস বা কর্মচারি মালিকের কোন কিছু নিলে সেটার জন্য হাত কাটা জাবে না বরং চাইলে অন্য শাস্তি দিতে হবে। [মালিক ১৬২৯; ইরওয়া ২৪১৯; দারাকুত্বনী ৩৪১২; মিশকাতুল মাসাবীহ ৩৬০৮]

ইসলামী শরিয়ায় চুরির শাস্তি হিসাবে হাত কাটার জন্য বিভিন্ন ক্ষেত্র আছে; এগুলো পূরণ না হলে হাত কাটা হয় না। চুরিকৃত বস্তুটি যদি মূল্যবান ও দরকারী কিছু হয়, চুরি যাবার আগে জিনিসটি যদি সম্পদ বা প্রয়োজনীয় দ্রব্য রাখার স্থানে রাখা হয় (খোলা স্থানে অরক্ষিতভাবে ফেলে রাখা না হয়), চুরির যদি অকাট্য প্রমাণ পাওয়া যায়, চুরি যাওয়া জিনিসটির মালিক যদি দাবি করে—কেবলমাত্র এ সব ক্ষেত্রে জন্য চোরের হাত কাটা যায়। [The hadd punishment for theft - Islam Question & Answer , তাফসিরে মাআরেফুল কোরআন ও ইবনে কাছির, সূরা মায়েদা আয়ত ৩৮ এর তাফসির]

কতুটুকু চুরি করলে হাত কাটা হবে? শাস্তির ধরন কেমন হবে?

কতটুকু পরিমান চুরি করলে চোরের হাত কাটা হবে সেটাও স্পষ্ট বলে দেওয়া হয়েছে ইসলামে। রাসূল ﷺ ইরশাদ করেন: ‘সিকি দিনার (১ দিনারের ১/৪ ভাগ অর্থাৎ ৩ দিরহাম) তথা এক গ্রাম থেকে একটু বেশি স্বর্ণ (অথবা উহার সমমূল্য) এবং এর চাইতে বেশি চুরি করলেই কোন চোরের হাত কাটা হয়। নতুবা নয়’’। [বুখারী ৬৭৮৯-৯১, মুসলিম ১৬৮৪; তিরমিযী ১৪৪৫; আবূ দাউদ ৪৩৮৪; ইব্নু মাজাহ্ ২৬৩৪; আহমাদ ২৪৭৭৯; নাসায়ী ৪৯২০-৪০]

এই হাদিস থেকে অনেক স্কলার বলেছেন যে ১.০৬২৫ গ্রাম স্বর্ণের মূল্যের কম দামের কিছু কেউ চুরি করতে তার হাত কাটা হবে না। [কিতাবুল উম (৬/১৫৯); আশ-শারহ আল-মুমতি' (১৪/৩৩৪)]

রাসূল ﷺ ঢাল চুরির জন্য যার মূল্য ছিলো ৩ ও ৫ দিরহাম, আসবাবপত্র ধার নিয়ে তা অস্বীকার করা নারীকে, মসজিদে একব্যাক্তি ৩০ দিরহামের চাদর চুরি করার কারনে হাত কেটেছিলেন। [বুখারি ৬৭৯৭; মুসলিম ১৬৮৬, ১৬৮৮; তিরমিযী ১৪৪৬; আবূ দাউদ ৪৩৭৪, ৪৩৯৪; ইব্নু মাজাহ্ ২৬৪৪; ইরওয়া ২৪০৫; নাসায়ী ৪৯১৩]

রাসূল ﷺ সেই চোরদের প্রতি লানত দিয়েছেন যাদের হাত লোহার টুপি, ডিম ও দড়ি চুরির কারনে কর্তন হয়। [সহিহ মুসলিম হাদিস ৪২৬১; আহমদ ৭৩৮৮ (এখানে নৌকা বাধার দড়ি ও লোহার তৈরি টুপির কথা বলা হয়েছে যার মূল্য তখন প্রায় ১০ দিরহামের বেশি ছিল)]

আরেকটি হাদিসে রাসূল ﷺ বলেছেন একটি ঢালের সমপরিমান মূল্য (চুরি) ব্যতিত চোরের হাত কাটবে না। আরেব বর্ণনায় এসেছে মহানবী ﷺ এর সময় চামড়ার ঢালের সমপরিমান মূল্য (চুরি) ব্যতিত চোরের হাত কাটা হত না। [সহিহ বুখারি ৬৭৯২-৯৪ ; সহিহ মুসলিম ১৬৮৫; নাসায়ী ৪৯৩৫, ৪৯৪০; তাফসির ইবনে কাসির সূরা মায়েদা আয়াত ৩৮ এর তাফসির, এই হাদিসের উপর ভিত্তি করে আবু হানিফা বলেছিলেন ১০ দিরহাম সমপরিমান কিছু চুরি হলেই হাত কাটা যাবে। হাদিসটি নিয়ে কিছু সমস্যা রয়েছে কারন তখন একটি ডালের মূল্য কত ছিল তা নিয়ে মতভেদ রয়েছে কেউ বলেছে ১০ দিরহাম আবার কেউ বলেছে ৩ দিরহাম, ওলামাগণ দলিল বিশ্লেসন করে ৩ দিরহামকেই বেশি গ্রহন যোগ্য মনে করেছেন।]

রাসূল (সা) কে গাছের ফল সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, ‘‘কেউ প্রয়োজনের খাতিরে সাথে কিছু না নিয়ে (কারোর কোন ফলগাছের ফল) শুধু খেলে তাকে এর জরিমানা স্বরূপ কিছুই দিতে হবে না। আর যে শুধু খায়নি বরং সাথে কিছু নিয়ে গেলো তাকে দ্বিগুন জরিমানা দিতে হবে এবং যথোচিত শাস্তিও ভোগ করতে হবে। আর যে ফল শুকানোর জায়গা থেকে বা ফল সংগ্রহ করে জমাকৃত থলে বা স্তূপ থেকে চুরি করলো এবং তা ছিলো একটি ঢালের সমমূল্য তখন তার হাত খানা কেটে দেয়া হবে। আর যে এর কম চুরি করলো তাকে ডবল জরিমানা দিতে হবে এবং যথোচিত শাস্তিও ভোগ করতে হবে। পাহাড়ে বা চারনভূমিতে বিচরণশীল জন্তু-জানোয়ার চুরির অপরাধে হাত কাটা যাবে না বরং তাকে জরিমানা করা হবে ও উপযুক্ত শাস্তি দেওয়া হবে কিন্তু যে বিচরণশীল জন্তু-জানোয়ারের স্বীয় আশ্রয়স্থল হতে চুরি করে নিয়ে যাবে তার হাত কাটা হবে।’’ [আবূ দাউদ ১৭১০; ইব্নু মাজাহ্ ২৬৪৫; হা’কিম ৪/৩৮০; তিরমিযী ১২৮৯, নাসায়ী ৪৯৫৬ - ৫৮; সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ১৭২২৪; মিশকাত ৩৫৯৫]

ইসলামী আইনে চুরির শাস্তি হিসেবে হাত কেটে ফেলার প্রয়োজন রয়েছে। ১মবার চুরির অপরাধে চোরদের ডান হাতের কব্জি কেটে ফেলা হয়। ক্ষতটি গরম তেল দিয়ে পরিষ্কার করা হয়, এবং হাম্বলী মাযহাবের মতে, তিন দিনের জন্য হাতটি অপরাধীর গলায় বেঁধে রাখা যেতে পারে।"[শাইখ ইব্রাহিম ইবনে মুহাম্মাদ ইবনে সালিম ইবনে দুয়ান, মানার আল-সারিল, পৃ. ১০১-০২, তেল লাগানোর দলিল শারহুস্ সুন্নাহ্ ২৬০২; মুসতাদরাক লিল হাকিম ৮১৫০; মিশকাতুল মাসাবীহ ৩৬০৪; এছাড়া হাত গলায় ঝুলিয়ে রাখার হাদিসটি যয়িফ]

শাফি এবং মালিকি মাযহাব মতে সাধারনত চুরি প্রমাণিত হলে এবং দেশের আদালত কর্তৃক রায় ঘোষিত হলে দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রশাসন ১মবার চুরির অপরাধে চোরদের ডান হাতের কব্জি কেটে ফেলবে। ২য়বার অপরাধের জন্য  বাম পায়ের গোড়ালী পর্যন্ত কেটে দিবেএরপরে আবারো চুরি করলে তার বাম হাতের কব্জি পর্যন্ত কাটতে হবে। এরপরে আবারো চুরি করলে তার ডান পায়ের গোড়ালী পর্যন্ত কাটতে হবে, ৫মবার অপরাধের একটি বিবেচনামূলক জরিমানা হবে। [ইমাম নববী, মিনহাজ আল তালিবিন ৪৪৮, এই শাস্তির পক্ষে দলিল হতে পারে আবু দাউদের ৪৪১০; নাসায়ী ৪০৭; মিশকাতুল মাসাবীহ ৩৬০৩; দারাকুৎনী ৩৩৯২, ৩৪৯১; মুছান্নাফ ইবনু আবী শায়বাহ ২৮৬০৬; ইরওয়া ২৪৩৩, ২৪৩৪]

কিন্তু হাম্বলী ও হানাফী ফকীহগণ অপরাধীকে দ্বিতীয় অঙ্গচ্ছেদের পর বন্দী করতেন যতক্ষণ না সে অনুতপ্ত হয়। তারা তৃতীয় বা চতুর্থ অঙ্গচ্ছেদ ঘটাতেন না। [হেফেনিং, সারিক, 4 দ্য এনসাইক্লোপিডিয়া অফ ইসলাম ১৭৩]

চোরের সাথে কেমন আচরন করবে?

বিচারকের কাছে নেওয়ার আগে যার জিনিস চুরি হয়েছে সে যদি চোরকে বা অন্য কোন অপরাধে ধরা পরা অপরাধী হলে তাকে যদি ক্ষমা করে দেয় তাহলে অপরাধীকে শাস্তি দেওয়া যাবে না কিন্তু বিচারকের কাছে নিয়ে গেলে শাস্তি দেওয়া হবে অপরাধীকে। [সুনানে আন-নাসায়ি, হাদিস নং ৪৮৭৮- ৪৮৮২; ইবন মাজাহ ২৫৯৫; মিশকাত ৩৫৬৮, সহীহাহ ১৬৩৮]

অনেক ক্ষেত্রে চোরকে সংশোধনের সুযোগ দেওয়ার নির্দেশনা পাওয়া যায়, যদি সে সংশোধন না হয় তাহলে শাস্তি দিতে হবে। [সুনানে আন নাসায়ি, হাদিস ৪৮৯০]

চোরের চুরি প্রমান না হলে, চুরির অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়া ব্যাক্তি থেকে তথ্য বের করা জন্য তাকে মারধর করা যাবে না যতক্ষন না তার অপরাধ প্রমান হয়। [আবু দাউদ ৪৩৮২; সুনানে নাসাই ৪৮৭৮; তিরমিযী ১৪৫০, মিশকাত ৩৭৮৫]

চোরকে শাস্তি দিতে হলে ইসলামিক রাষ্ট্র হতে হবে যেখানে ইসলামের বিধান চলে। তারপর চোরকে শুধু বিচারকই শাস্তি দিতে পারবে তাও স্পষ্ট টপ্রমানের উপর ভিত্তি করে ও অবস্থার কথা চিন্তা করে শাস্তি দিবেন তিনি। কেউ যাতে চুরি করতে না হয় আগে সে ব্যবস্থা করতে হবে। সে ব্যবস্থা করার পরও যদি কেউ চুরি করে তাহলে তাকে শাস্তি দিবে।

কোন দেশে যদি ৩/৪ টা চোরকে এভাবে শাস্তি দেওয়া হয় তাহলে দেখবেন অন্য চোররা আপনা আপনিই আসতে আসতে চুরি ছেড়ে দেওয়া শুরু করবে ভয়ে ইনশাআল্লাহ। তখন আর বেশি মানুষকে শাস্তি দিতে হবেনা। ইসলামে অপরাধের শাস্তিগুলা এমন যে কয়েকজনের উপর প্রয়োগ শুরু করলে সেই অপরাধ আপনা আপনি বেশি মানুষকে শাস্তি না দেওয়া ছাড়াই নির্মূল হওয়া শুরু করে।

কিন্তু তারপরও কিছু মানুষের কাছে এটা অমানবিক মনে হবে, এখন তাদের কাছে আমার প্রশ্ন যদি কেউ যানে যে সে বিষ খেলে মারা যাবে তারপরও যদি সে বিষ খায় তাহলে কি বিষকে দোষারোপ করা হবে? অবশ্যই না। ঠিক একই রকম ভাবে যখন কেউ যানে যে সে যদি চুরি করে তাহলে তার হাত কাটা হবে তারপরও যদি সে চুরি করে তাহলেত তারপরিনতির জন্য আর আইনের দোষ দেওয়া যায় না। 

যদি এই অপরাধটা এমন হত যে এতে অন্য কারো কোন ক্ষতি হয় না, বরং ক্ষতি হলে ‍শুধু তারই হয় তাহলে হয়ত এতে কিছুটা হালকা পাতলা যুক্তি থাকত, যার মাধ্যমে কেউ এর প্রতিবাদ করত, কিন্তু এই ক্ষেত্রেত সেউ সুযোগটাও নেই। চোর অনেক প্রকারেরই আছে, যেমন সাধারন চোর যারা জনগনের জিনিস চুরি করে, তারপর কিছু হাই লেবেলের চোর যারা দামি জিনিস চুরি করে ধনীব্যাক্তিদের, আরো একটু উপরে তারা যারা অনেক বেশি পরিমানের অর্থের জিনিস চুরি করে সেটা ব্যাং থেকে, ধনী ব্যাক্তিদের থেকে, ঐতিহাসিক জিনিস থেকে, রাষ্ট্রিয় মূল্যবান সম্পদ থেকেও হতে পারে। আবার কিছু আছে রাষ্ট্রের সম্পদ চুরি করে। সব ধরনের চোরই খারাপ কিন্তু উপরের দিকের চোরগুলো বেশি ভয়ংক কারন তাদের কারনে যেমন অনেক মানুষের মানুষের ক্ষয়ক্ষতি হয় তেমনই রাষ্ট্রেরও কয়ক্ষতি হয়। আইন তৈরি করাই হয় মানুষ যাতে শাস্তির ভয়ে এই ধরনের অপরাধ না করে, কিন্তু তারপরও যদি কেউ শাস্তির ভয় না করে অপরাধ করে তাহলে কি তাকে শাস্তি না দিয়ে জামাই আদর করা উচিৎ? অবশ্যই না। কারন উপযুক্ত শাস্তি না দিলে পরবর্তিতে অন্যরাও একই অপরাধ করার সাহস দেখাবে।

তারপরও যারা এটাকে অমানবিক বলে তাদের কাছে প্রশ্ন তারা কিসের ভিত্তিতে এটাকে অমানবিক বলে? যদি নিজের বিবেকের মাধ্যমে বলে তাহলেত হবে না কারন একেক মানুষের বিবেক একেকটাকে সঠিক বললে, সবার হিউমেন ডোমেনত আর এক রকম কাজ করবে না।

Ashraful Nafiz

I am an ordinary Muslim student who is interested in acquiring the beneficial knowledge given by Allah and hopes to spread that knowledge among the people. facebook youtube twitter instagram quora

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Would you tell me something

নবীনতর পূর্বতন